প্রথমেই আসুন মাইডাস টাচের গল্পটা শুনে আসি। গ্রীক পুরাণে বর্ণীত আছে প্রাচীন ফ্রিজিয়াতে (বর্তমানে তুরস্ক) একসময়ের রাজা ছিলেন মাইডাস। তার বাবার নাম ছিল গরডিয়াস। একদম হতদরিদ্র অবস্থায় বাবার হাত ধরে ফ্রিজিয়াতে প্রবেশ করে মাইডাস। কাকতালীয় ভাবে যেদিন ওরা এল, সেদিনই নাকি রাজ্যের পরবর্তী রাজা ষাঁড়ের টানা ওয়াগনে চেপে রাজধানীতে প্রবেশ করবেন বলে ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন এক ওরাকল (জ্যোতিষী)। মাইডাসের বাবাকে তৎক্ষণাৎ রাজা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় লোকজন। বাবার মৃত্যুর পর সিংহাসনে আরোহন করেন মাইডাস। রাজ্যের অঢেল ধনদৌলতেও মন ভরছিল না মাইডাসের। দেবতাদের কাছে আরও ধন সম্পদের জন্য প্রার্থনা করেন মাইডাস। তার প্রার্থনা আর নৈবদ্যের চাপে অতিষ্ঠ হয়ে দেবতারা তাকে এক অদ্ভুত বর দেন-শুধু স্পর্শ করেই যেকোন বস্তুকে সোনায় রুপান্তর করতে পারবেন তিনি। এটাই মাইডাস টাচ নামে পরিচিত।
কল্পকাহিনী
থেকে বাস্তবের জগতে আসা যাক। আমাদের এই দুখী বাংলাতেও মাইডাস টাচ হাতে এক রাজপুত্তুরের
দেখা পাওয়ার সৌভাগ্য(!) হয়েছে আমাদের। যিনি কোন স্বীকৃত ব্যবসা বাণিজ্য ছাড়াই
হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। যার অর্থ উপার্জনের গল্প পৌরাণিক কাহিনীকেও
হার মানায়। হ্যাঁ, আমি তারেক জিয়ার কথা বলছি। আমি একজন লুটেরা দুর্নীতিবাজের কথা
বলছি, যিনি রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন।
হতদরিদ্র
গরডিয়াস ও মাইডাসের মত তারেক জিয়ার গল্পের শুরুটাও একইরকম। সে গল্প ভাঙ্গা
স্যুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জির গল্প। ১৯৮১ সালের ৩০শে মে নিহত হওয়ার সময় এসবই নাকি
রেখে গিয়েছিলেন তারেক জিয়ার বাবা মরহুম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। রাষ্ট্রই তখন
জিয়াউর রহমানের পরিবারের যাবতীয় দায়িত্ব নেয়। পরিবারের বাকি সদস্যরা হল তারেকের
জিয়ার মাতা খালেদা জিয়া এবং ভাই আরাফাত রহমান কোকো (কেন আরাফাত জিয়া নয়, সে
প্রশ্নের কোন উত্তর নেই)। নিয়ম বহির্ভূত ভাবে তাদের দেয়া হয় ঢাকা সেনানীবাসের
মইনুল রোডে একটি এবং অভিজাত এলাকা গুলশানে আরেকটি, মোট দুটি বাড়ি। এছাড়াও তাদের
দৈনন্দিন ভরণপোষণের জন্য প্রয়োজনীয় ভাতাও বরাদ্দ করা হয়েছিল। সম্পদ বলতে এসবই ছিল
তাদের। ১৯৯১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম আয়কর রিটার্ন
দেয় তারেক জিয়া যেখানে তার সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয়েছিল সর্বমোট ৪২
লাখ টাকা। এর বেশিরভাগই আবার ছিল উপহার সুত্রে পাওয়া। সেই টাকা থেকেই আজ তারেক
জিয়া নয় হাজার কোটি টাকার মালিক, বাংলাদেশের চতুর্থ ধনী ব্যাক্তি (ফোর্বস
ম্যাগাজিনের তথ্যমতে)। এটা প্রকাশিত সম্পদের পরিমাণ। আর অপ্রকাশিত সম্পদের সঠিক পরিমাণ
একমাত্র তারেক জিয়া ছাড়া আর কেউই বলতে পারবে না। সৌদি আরবে পাচার করে দেয়া চারশটি
স্যুটকেসে কি ছিল তা আজো আমাদের অজানা।
জিয়াউর
রহমানের মৃত্যুর পর ১৯৯১ সালে বিএনপি পুনরায় রাস্ট্রক্ষমতায় আসে। ১৯৯১-১৯৯৬ সময়ের
মাঝেও মাইডাস টাচ হাতে পাননি তারেক জিয়া।
এই সময়ে খুব বেশি আলোচনাতেও ছিলেন না তিনি। কিন্তু ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করে
বিএনপি জামাত জোট সরকার গঠন করার পরই মূল মঞ্চে আসেন তারেক জিয়া। ২০০২ সালে
মাত্র ৩৫ বছর বয়সে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হন তারেক জিয়া। এটাই মনে হয় ছিল
তারেক জিয়ার মাইডাস টাচ কেননা এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে
হয়নি তাকে। বহুল আলোচিত
“হাওয়া ভবন”
কে উনি ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেন। দীর্ঘদিনের বন্ধু
গিয়াসউদ্দিন আল মাম্নুনকে সাথে নিয়ে গড়ে তোলেন ব্যাবসায়ী সিন্ডিকেট যার মাধ্যমে
২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশের যাবতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
এভাবেই দুই বন্ধু মিলে গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। বলা যেতে পারে খালেদা জিয়া
এসময় শুধু নামেই প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, যাবতীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত ছিল তারেক জিয়ার
হাতে।
বাসযাত্রী
থেকে হজ্জযাত্রী পর্যন্ত,টঙয়ের দোকান থেকে শুরু করে মাল্টিন্যাশনাল
কোম্পানি পর্যন্ত বোধহয় এমন কেও নেই যার কাছ থেকে তারেক জিয়া উচ্চ অঙ্কের অর্থ
আদায় করেননি । যেকোন ধরণের আর্থিক বিনিয়োগ, বড় ব্যবসায়িক লেনদেন, আন্তর্জাতিক
ব্যবসায়িক চুক্তি ইত্যাদির কোনকিছুই হাওয়া ভবন তথা তারেক জিয়াকে ডিঙ্গিয়ে হওয়া
ছিল অসম্ভব। অর্থের মাধ্যমে মন্ত্রিত্ব পাইয়ে দেওয়া,ব্যবসা পাইয়ে দেওয়া, সরকারি
প্রকল্পে পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ আরোপ,সরকারি কর্মকর্তাদের
পদোন্নতি,সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের ফাইল হাওয়া
ভবনে নিয়ে পরীক্ষা করা ইত্যাদি সবই করেছেন তারেক জিয়া। ২০০৭ সালে তারেক জিয়া
গ্রেফতার হওয়ার পর হাওয়া ভবন থেকে উদ্ধার করা হয় ত্রিশটি টাকা গণনার মেশিন। এথেকেই
ধারণা পাওয়া যায় কত বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেন হত হাওয়া ভবনে। দুর্নীতিতে বাংলাদেশ ২০০২-২০০৬ পর্যন্ত টানা ৫
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। নিঃসন্দেহে বলা যায় এটা ছিল তারেক জিয়ার একক নৈপুণ্যের
অবদান। দুর্নীতির এই চ্যাম্পিয়নশিপে সন্দেহাতীতভাবে তিনিই ছিলেন প্রতিবারের ম্যান
অব দ্য সিরিজ।
এবার তারেক জিয়ার কিছু সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির ব্যাপারে
আলোকপাত করা যাক।
বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে গৃহীত ডিএপি-১
ও ডিএপি-২ সার কারখানার ব্যয় ৮৫৯ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা করা
হয়। মুলত এই দুই প্রকল্প থেকেই তারেক জিয়া একাই হাতিয়ে নেন ৫০০ কোটি টাকারও বেশি
পরিমাণ অর্থ। এছাড়াও টঙ্গীতে ২৫০ মেগাওয়াট ও বড়পুকুরিয়ায় ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ
প্রকল্প,১৫৮৮.৯৫
কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষে পাগলা পানি শোধনাগার প্রকল্প,৯৮৭.৯৫
কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষে উত্তর ঢাকা পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প,৭০১
কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষে সিদ্ধিরগঞ্জ ২১০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র (দ্বিতীয় ইউনিট),৯২৭.৫৫ কোটি টাকা সংশোধিত
ব্যয়ে খুলনা ২১০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রভৃতি প্রকল্প থেকে তারেক জিয়া
হাতিয়ে নেন সর্বমোট দুই হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ।
বিএনপি জামাত জোট সরকারের আমলে ধংসের দ্বারপ্রান্তে চলে
যায় এদেশের বিদ্যুৎ খাত। তারেক জিয়া আর মামুনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান “খাম্বা
লিমিটেড” মাধ্যমে
বিদ্যুৎ খাতের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেন তারেক জিয়া। জোট সরকারের পাঁচ
বছরে বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দকৃত ১৫ হাজার কোটি টাকার সিংহভাগই গিয়েছে তারেক জিয়া আর
গিয়াসউদ্দীন আল মামুনের পকেটে। বিদ্যুতের অভাবে সেসময় দেশের শিল্পোৎপাদন মারত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
তারেক আর মামুন গংয়ের লোভের কবলে দেশের বিদ্যুৎ খাত এবং শত শত শিল্প প্রতিষ্ঠান
রুগ্ণ হলেও তারেক-মামুনরা প্রতিনিয়ত মোটাতাজা হয়েছেন।
২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত পুলিশ বিভাগে যত নিয়োগ
হয়েছে তার ৮০ ভাগই হয়েছে টাকার বিনিময়ে এবং এই টাকার ভাগ সরাসরি তারেক জিয়া
পর্যন্ত পৌছাত। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুতফুজ্জামান
বাবর একথা স্বীকারও করেছেন। ২০০৪ সালে গিয়াস
উদ্দিন আল মামুন প্রতারণার মাধ্যমে গাজীপুর বন বিভাগের প্রায় ৭২ বিঘা জমি বরাদ্দ
নিয়েছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে গাজীপুর ভাওয়াল উদ্যানের পাশে এই জমি অন্যের নামে
বরাদ্দ নিয়ে তারা প্রায় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ওয়ান ডেনিস মিল ও ওয়ান
স্পিনিং মিল স্থাপন করেছেন। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের আপত্তি এবং আইন মন্ত্রণালয়ের
মতামত উপেক্ষা করে ভূমি মন্ত্রণালয় এই জমি বরাদ্দ দেয়। তৎকালীন ভূমি সচিব আজাদ
রুহুল আমিন ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসক সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে যোগসাজশে প্রতিবিঘা জমির
দাম মাত্র সোয়া লাখ টাকার কিছু বেশি ধার্য করা হয়। তারপর বন কেটে গড়ে তোলা হয় টেক্সটাইল
মিল। একাজের পেছনেও ছিল তারেক জিয়ার আশীর্বাদ। এছাড়াও গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও
তারেক জিয়া রেজা কন্সট্রাকশান থেকে ১ কোটি ৩২ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট থেকে আত্মসাত করে আড়াই
কোটি টাকা। সিমেন্স কোম্পানিকে টেলিটক প্রজেক্টের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্যও কয়েক
কোটি টাকার ঘুষ আদায় করা হয়।
বসুন্ধরা গ্রুপের টেলিযোগাযোগ শাখার পরিচালক হুমায়ুন কবির
সাব্বির (৩০) ২০০৬ সালের ৪ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানের একটি বাসায় খুন হন। এ
হত্যা মামলার প্রধান আসামী ছিল বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের
ছেলে সাফায়েত সোবহান সানবীর। তারেক জিয়া ১০০ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহনের মাধ্যমে সানবীরকে দেশের বাইরে চলে
যাওয়ার সুযোগ করে দেন। এমনকি পুলিশের চার্জশীট থেকেও সানবীরের নাম বাদ দেয়ার
চেষ্টা করা হয় যদিও সংবাদ মাধ্যমগুলোর চাপে সেটা শেষপর্যন্ত সফল হয়নি।
গাজীপুর শহরের ছায়াবীথি এলাকায় ১০ কাঠা জমির ওপর তিনতলাবিশিষ্ট
একটি আকর্ষণীয় ভবন, যার নাম খোয়াব। কাগজপত্রে জায়গা ও ভবনের মালিক গিয়াস উদ্দিন আল
মামুনের স্ত্রী হলেও তারেকের টাকায় মামুন এ ভবনটি তৈরি করেন। এ ভবন থেকে আহসান
উল্লাহ মাস্টারকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ভবনে তারেক জিয়া ও
মামুন প্রায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন। সারারাত থেকে সকাল বেলা চলে আসতেন। সুন্দরী
তরুণী,নায়িকা ও মডেল
কন্যাদের প্রতি রাতেই যাতায়াত ছিল সেখানে। এলাকাবাসীদের ঠাট্টা করে বলতে শোনা যায়,তারেক রহমান সুন্দরী ললনা,নায়িকা-গায়িকা এবং মডেলদের
নিয়ে রাতভর আমোদ-ফূর্তি করে জাতীয়তাবাদী আদর্শে মাতাল হয়ে খোয়াব দেখছেন।
শুধু ধনসম্পদের প্রতি নয়, ক্ষমতার প্রতিও ছিল তারেক জিয়ার
দারুণ মোহ। ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য উনি সম্ভাব্য সব কিছুই করেছেন তিনি। ২০০১-২০০৬ সালের মাঝে দেশব্যাপী জংগী
উত্থানের পিছনেও হাত ছিল তারেক জিয়ার। তার সখ্য ছিল মুম্বাইয়ের কুখ্যাত মাফিয়া ডন
দাঊদ ইব্রাহীমের সাথেও। দুবাইয়ে বেশ কয়েক বার
উনি দেখাও করেন দাউদ ইব্রাহীমের সাথে। ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয়
নেত্রী শেখ হাসিনার উপর যে নৃশংস গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল তার
মাস্টারপ্ল্যানারও ছিলেন তারেক জিয়া। ২০০১-২০০৬ সালে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের এক
জঘন্য নজির সৃষ্টি করেছিলেন তারেক জিয়া। উনি যেসব এলাকায় রাজনৈতিক সফরে যেতেন সেসব
এলাকাতেই বিএনপি দলীয় অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়ে যেত বহুগুন। তারেক জিয়া
তার নিজের এলাকা বগুড়ায় সন্ত্রাসী ও নানা ধরনের অপরাধীদের দলে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন। ওই সময়ে সংঘটিত অর্ধডজন খুনের মামলার
আসামিরা বগুড়া বিএনপির নেতৃত্বে থেকে আইন ও বিচার ব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।
পুলিশের নাকের ডগায় ঘুরছে তারেকের লোক পরিচয় দিয়েই।
জিয়াউর রহমান দম্ভভরে বলতেন “মানি ইজ নো প্রব্লেম”। আরও বলতেন “আমি রাজনীতিবিদদের জন্য
রাজনীতি করা কঠিন করে দিব”। ২০০১-২০০৬ সময়ে তার স্বপ্নই বাস্তবায়ন করেছেন তার ছেলে তারেক জিয়া।
পুরো দেশটাকে জিম্মি করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড় আর
রাজনীতিকে করেছেন কলুষিত।
সাড়াজাগানো
ওয়েবসাইট উইকিলিক্স বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের এমব্যাসির একটি গোপন
তারবার্তা ফাঁস করে। এতে তারেককে "দুর্নীতি ও চুরির মানসিকতাসম্পন্ন"
বলে আখ্যায়িত করে। বার্তায় তারেকের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার সুপারিশ
করা হয়। তারবার্তায় আরও বলা হয়,তার (তারেকের) কোটি
কোটি ডলারের সরকারি অর্থ চুরি এই মডারেট মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের রাজনৈতিক
স্থিতিশীলতা ব্যাহত করেছে।
এই ছিল
মাইডাস টাচ হাতে পাওয়া রাজপুত্তুর তারেক জিয়ার আপাত প্রকাশিত দুর্নীতির গল্প যা
রুপকথাকেও হার মানায়। অনেকের কাছেই এটা চর্বিত চর্বণ মনে হতে পারে তারপরও আরেকবার
মনে করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলাম। কারন দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমাদের মেমোরি
গোল্ডফিশের মত। অতীতকে আমরা অনেক সহজেই
ভুলে যাই। “আর কখনো
রাজনীতি করব না” এই মুচলেকা
দিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য হওয়া তারেক জিয়া আবারও রাজনীতি ফিরে আসার চেষ্টা করছেন।
লন্ডনে থেকে উনি অতীত ভুলে গিয়ে নতুন করে শুরু করার মন্ত্র শুনাচ্ছেন। এখন
দেশবাসীকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, তারা আবারও শিয়ালের কাছে মুরগী বর্গা দিবে কি না?
কারণ বিএনপিকে নির্বাচিত করে তারেক জিয়ার হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া এবং শিয়ালের কাছে
মুরগী বর্গা দেয়ার মাঝে আমি কোন পার্থক্য দেখিনা। সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক এই প্রত্যাশাই করি।
কারণ আমাদের একটি ভুল সিদ্ধান্তই এই সোনার
বাংলাকে বহুবছর পিছিয়ে দিতে পারে। যা আমাদের কারুরই কাম্য নয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন