বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০১৩

গোলাপীর সাক্ষাৎকার


একটি কাল্পনিক সাক্ষাৎকার :
সাংবাদিক : ম্যাডাম আপ্নি যে জামায়াতের সাথে রাজপথে নামলেন, মেজর সাহেব থাকলে কি এটা পারতেন?
ম্যাডাম : বলেন কি? উনিই তো দাওয়াত দিয়ে গোলাম আজম কে এদেশে আনলেন। উনিই তো রাজাকার শাহ আজিজ কে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন, রাজাকার আলীম, ঘাতক মান্নান, রাজাকার হাসনাত কে মন্ত্রী এমপি বানিয়েছেন।
সাংবাদিক : শত হলেও তিনি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের জেড ফোর্সের অধিনায়ক
ম্যাডাম : আমি যে ফোর্সের অধিনায়ক সেটাও জেড ফোর্সেরই অংশ। কর্নেল অলীরা আমার সাথেই আছে।
সাংবাদিক : সিঙ্গাপুর থেকে এসেই জামাতের আট চল্লিশ ঘন্টার সাথে আরো একদিন হরতাল দেয়া কি ঠিক হয়েছে?
ম্যাডাম : আমিতো দেইনি, তারেক দিতে বলেছে। সে বল্ল, মা তাড়াতাড়ি দেশে যাও। জামাত আন্দোলনের সব ক্রেডিট নিয়ে নিচ্ছে, তুমি গিয়ে চালকের আসনে বস।
সাংবাদিক : আপনি সিঙ্গাপুরে কেন গেলেন? আসলেই কি শরীর ....
ম্যাডাম : এক্টা ভয়াবহ ব্যাপার ছিলো। পরীক্ষা করে দেখলাম কিছুই না। ছোট ছেলেটার কিছু টাকার ভেজাল ছিলো, বন্ধুদেশের বিশেষ কিছু মানুষের সাথে কথা বলার ছিলো।
সাংবাদিক : আপনি যে ভারতের রাস্ট্রপতির সাথে দেখা করলেন না, এতে তো ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে।
ম্যাডাম : সমস্যা হলেও কিছু করার নাই। জামাত বলসে হিন্দুস্তানের প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করলে তারা লন্ডনে তারেককে আর টাকা পাঠাবে না। তাই দেখা করি নাই।
সাংবাদিক : জামাত-শিবিরকে সাথে রেখে তো আপ্নি নতুন প্রজন্ম থেকে দুরে সরে যাচ্ছেন
ম্যাডাম : এই ব্যাপারেও আমি নিরুপায়। বিএনপি ছাত্রদল দিয়ে তো আন্দোলন হয় না। অনেক নেতা তো আমার ফোন ও ধরে না। এখন জামাত ই ভরসা। তবে একবার ক্ষমতায় যাইতে পারলে তারেক এইসব প্রজন্ম টজন্ম সব সাইজ করে ফেলবে। এই কাজ আমার ছেলে খুব ভাল পারে।

রাস্ট্রপতির প্রতি শেষ শ্রদ্ধাঞ্জলী

নিশ্চিত ভাবেই জানি প্রথম সাক্ষাতেই জাতির পিতা জিল্লুর রহমান কে বলবেন, আমার মেয়েকে একা রেখে তুমি চলে আসলে?
মহামান্য রাস্ট্রপতির অকাল প্রয়ানে জাতি শুধু অভিভাবকহীনই হয় নি, জননেত্রী শেখ হাসিনা হারালেন তার আস্থার শেষ ঠিকানাটুকু। মনে পড়ে যায় একুশে আগস্টের সেই ভয়াল গ্রেনেড হামলার কথা, প্রিয়তমা স্ত্রী আইভী রহমান আহত হয়ে পড়ে আছেন নীচে কিন্তু জিল্লুর রহমান মানবঢাল তৈরী করে শেখ হাসিনা কে রক্ষায় ব্যস্ত। আইভী রহমানের মৃত্যুর পর কেউ হাসতে দেখেন নি জিল্লুর রহমানকে, অথচ বুকে প্রিয়তমা হারানোর সেই কস্টকে ধারন করেও ওয়ান এলিভেন পরবর্তী দুঃসময়ে শেখ হাসিনা কে আগলে রেখেছিলেন এই মহান নেতা। ত্যাগ ও আদর্শের এমন উদাহরণ বিশ্ব রাজনীতিতেই বিরল।
মহামান্য রাস্ট্রপতি, এই ক্ষুদ্র মানুষ টির পক্ষ থেকে অঞ্জলি গ্রহণ করুন। জাতির পিতা এবং আপনার প্রিয়তমা স্ত্রীর সান্নিধ্যে পরজনমের দিনগুলো অবশ্যই ভালো কাটবে আপনার , সময় করে শুধু আমাদের জন্য আশীর্বাদ করবেন যেন আমরা আমৃত্যু আপনার আদর্শ অনুসরণ করে চলতে পারি।

এলোমেলো ভাবনাগুলো

১)
তোমাদেরকে আমি আমার ছেঁড়া ঘুড়িটার গল্প বলেছি? বলিনি বোধহয়। তবে শোন সেই গল্প।
 খুব প্রিয় একটা ছেঁড়া ঘুড়ি ছিল আমার। কিযে ভাব ছিল আমাদের মাঝে। আমরা একসাথে হাসতাম, একসাথে কাঁদতাম। কত যে আনন্দ বেদনার স্মৃতি জড়িয়ে আছে সেই ঘুড়িটার সাথে।
আমার প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার রেজাল্ট যেদিন বের হল কি যে খুশি হয়েছিল সে, বলে বোঝাতে পারবোনা। বাবার পকেট থেকে প্রথম যেদিন টাকা চুরি করলাম, খুব কস্ট পেয়েছিল আমার ঘুড়িটা। রুপান্তির কাছ থেকে জীবনের প্রথম প্রেমপত্রটি যখন পেলাম, কি লজ্জাটাই না পেয়েছিল সে। লজ্জায় একেবারে লাল হয়ে গিয়েছিল। জীবনে প্রথম যেদিন সিগারেটে টান দিলাম, খুব রেগেছিল আমার উপর। কথা বলেনি তিনদিন। আরো কতশত ঘটনা, এযেন এক সুখ দুঃখের গীতিকাব্য। আমার সেই ঘুড়িটাই দূর আকাশে উড়তে উড়তে একদিন মেঘ হয়ে গেল, আর ফিরে এলোনা আমার কাছে। কিন্তু আমি জানি বৃষ্টি হয়ে আমার কাছে ফিরে সে আসবেই, তাকে যে আসতেই হবে। 
আমি সেই বৃষ্টির প্রতীক্ষায় আছে, আমি আমার ছেঁড়া ঘুড়ির প্রতীক্ষায় আছি।

২)
নাহ,ঘুম টাকে নিয়ে আমি আর পারছি না। এই কিছুক্ষন আগেও আমার পাশেই ছিল। আমাকে বলল,বাইরে থেকে একটু চাদের আলো খেয়ে আসি,আমি আর মানা করলাম না। এখন জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি আকাশে চাদ নেই। বুঝতে পেরেছি ঘুম টা নিশ্চই মোড়ের টং ঘরে গিয়ে একটা সিগারেট ধরাবে !
এবার এর একটা বিহিত করতেই হবে। ভাবছি ঘুম টাকে একটা বোরডিং স্কুলে দিয়ে দিব।তাহলে আর আমাকে বিরক্ত করতে পারবে না।
ঘুমহীন একটা জীবন,মন্দ হবে না আশা করি !

৩)
আগের যুগের প্রেমঃ "ভালবেসে সখী নিভৃতে যতনে আমার নামটি লিখো তোমার মনেরও মন্দিরে"

এ যুগের প্রেমঃ ভালবাসলে নিভৃতে মনের মন্দিরে কিছু লিখার দরকার নাই। ফেসবুকে রিলেশনশিপ স্ট্যাটাসটা চেঞ্জ করে সবাইকে জানিও দিও।

সত্যিই, প্রজন্ম বড় অদ্ভুদ !

৪)
অনেকক্ষণ ধরে নিজের টাইম লাইন ঘাটলাম। বহু স্মৃতি মনে পড়ল। মনে পড়ল অনেক মানুষের কথা। বেশ কয়েকজন আছেন যারা চিরতরে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। এই ফেসবুক তাদের স্মৃতি ঠিকই ধরে রেখেছে।
সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছে ভার্সিটি লাইফের চমৎকার দিনগুলোর কথা। অসাধারণ সব বন্ধুদের সাথে কাটানো চমৎকার অনেক মুহূর্তের স্মৃতি মনের কোণে ভীড় করছে।
অনেক অনেক ট্যুর এর ছবি দেখে আবার ঘুরতে বের হওয়ার ইচ্ছা জেগে উঠেছে। কতদিন ঘুরতে যাইনা।
নিজের টাইমলাইন ঘেটে নিজের ব্যাপারেই নতুন কিছু ইনফো পেলাম ! এই যেমন ২০১০ সালে আমি প্রথমবারের মত বুঝতে পেরেছিলাম যে আমার একটা গার্লফ্রেন্ড থাকলে মন্দ হত না। (প্রমাণ দিয়া দিলাম সাথে)
অনেক কিছুই চেঞ্জ হয়েছে। বড় হয়ে গিয়েছি, ফেসবুকেও এখন ইংলিশে না লিখে বাংলায় লিখি। কিন্তু একটা অভ্যাস এখনো বদলায়নি। আর তা হল নচিকেতার গান শুনে শুনে তার লিরিক স্ট্যাটাসে তুলে দেয়া। নচিকেতাই আসলে আমার নিঃসঙ্গ সময়ের প্রকৃত বন্ধু।
 



 

মে দিবসের ইতিকথা

সহস্র লাশের উপর দাড়িয়ে আগামীকাল পালিত হতে যাচ্ছে "মহান মে দিবস "। ফিনিক্স, স্পেক্ট্রাম, তাজরীন এবং অতি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া রানা প্লাজার দূর্ঘটনা আমদের এ কথাই মনে করিয়ে দেয় যে, শ্রমিক ভাইবোন দের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি এতটুকুও অথচ এর জন্যই 1886 সালে শ্রমিক আন্দলোনে জীবন দিয়েছিলেন শ্রমিক ভাইয়েরা।

কি ছিলো সেই আন্দোলনের ইতিহাস?


1886 সালের শুরু থেকেই দৈনিক আট ঘন্টা কাজের সময় ও ন্যায্য মজুরীর দাবিতে শ্
রমিক আন্দোলন শুরু হয় ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে। পহেলা মে 'র শ্রমিক সমাবেশের মাধ্যমে এই আন্দোলন ব্যাপকতা লাভ করে। এরই ধারাবাহিকতায় চারই মে আমেরিকার হে মার্কেটের সামনে আরেকটি সমাবেশের জন্য জমায়েত হয় শ্রমিকরা। সেই সমাবেশ থেকে পুলিশের উপর একটি বোমা ছুড়ে মারে কেউ একজন যার পরিচয় কখনোই জানা যায় নি। এই ঘটনার জের ধরে পুলিশ সেই সমাবেশে গুলিবর্ষণ করে। নিহত হন এগারো জন শ্রমিক। অথচ এই ঘটনায় শ্রমিকদের উস্কানি দেয়ার অভিযোগে ছয় শ্রমিক নেতাকে প্রকাশ্য ফাসির রায় দেয়া হয় 1987 সালের 11 নভেম্বর। শ্রমিক নেতাদের মাঝে ছিলেন পার্সন্স, জোয়ান মোস্ট, আগস্ট স্পীজ, লুই লিংক। লুই লিং কারাগারেই আত্মহত্যা করেন। বাকিদের প্রকাশ্য ফাসি দেয়া হয়। ফাসির মঞ্চে দাড়িয়ে আগস্ট স্পীজ বলেছিলেন, "আজ আমাদের নিঃশব্দতা, তোমাদের আওয়াজ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী। " এই ঘটনার স্মৃতি ধরে রাখার জন্য. রেমন্ড লেভিনে 1890 আমেরিকার জাতীয় শ্রমিক কংগ্রেসে পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব করেন। সেই থেকে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের প্রতীক হিসাবে পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে।

যে শ্রমিকদের ঘামের বিনিময়ে আমদের সভ্যতা উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে সেই শ্রমিকরা এখনো চরমভাবে অবহেলিত। তাদের নিরাপদ জীবনের গ্যারান্টি আমরা দিতে না পারি অন্ততপক্ষে নিরাপদ মৃত্যুটা নিশ্চিত করা হবে, এবারের মে দিবসে এই হোক আমাদের সকলের অঙ্গিকার।
এপ্রিল ৩০,২০১৩

সকাল সিরিজ

১)
আমার ভাতিজা সকাল। বয়সে কম হলেও রাজনীতির ব্যাপারে ব্যাপক সচেতন। রাজনীতির সব 'হট' আইটেমের সাথেই সে কমবেশি পরিচিত। ম্যাডাম জিয়ার বক্তৃতা তো খুব আগ্রহ নিয়া শুনে। শুনে আর মুচকি মুচকি হাসে। কেন যে হাসে তা আল্লাহ পাকই জানেন।
তো আজ ঘুম থেকে উঠতেই সকাল আমাকে বলল,
চাচ্চু আমি 'গুজব' কে দেখব।
কি দেখবা বাবা?
আরে তুমি গুজব কে চিনো না? এটাই তো এখন রাজনীতিতে সবচেয়ে হিট। একে আমার দেখতেই হবে। সকালের জবাব।  
বাসায় ফিরে সকালকে কি যে বোঝাব তাই ভাবতেসি। ভাতিজার আবার রাগ খুব বেশি।

২)
"সকাল পাখি", আমার ভাতিজা। আমার আদরের বাবাই। মাত্র একুশ মাস বয়স তার, এই বয়সেই আধো আধো গলায় যখন জয় বাংলা বলে তখন বুকটা ভরে যায়। প্রচন্ড চঞ্চল সে, নিশ্চিত ভাবেই জানি আমার থেকেও অনেক বড় দেশপ্রেমিক হবে আমার বাবাই। ব্লগে ঝড় তুলবে তার লেখা, মিছিলের সামনে থেকে দৃপ্ত পদক্ষেপে সে মাড়িয়ে যাবে সকল অন্যায় অবিচার। কারো রক্তচক্ষুই থামাতে পারবে না তার অগ্রযাত্রা।
সেই সকালের সাথেই আমার একটি কাল্পনিক কথোপকথন।
চাচ্চু তোমাদেরকে কেউ কেউ পচা বলে কেন, কেন তোমাদের জেলে নিয়ে যায়?
বাবারে, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা আমাদের পুর্বপুরুষদের খারাপ বলতো তারাই এখন আমাদেরও খারাপ বলছে।
তাইলে চাচ্চু আমি যখন ব্লগ লিখবো তখন কি তারা আমাকেও পচা বলবে?
নারে বাবা, আমরা তোদের সুন্দর একটা দেশ দিয়ে যাব, যেখানে কেউ তোদের আর খারাপ বলবেনা।
কিন্তু, দীপ চাচ্চুকে যে মারল তোমরা তো এখনো কিছুই করতে পারলে না। ফটিকছড়িতে যে এতগুলো মানুষ মরল, কি করতে পেরেছ তোমরা? 
চুপ হয়ে গেলাম প্রশ্নটা শুনে। আসলেই এ প্রশ্নের কোন উত্তর নেই। বুঝতে পারলাম সংগ্রামের পথ আসলেই অনেক বাকি। আরও অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে আমাদের। কিন্তু এই যুদ্ধে আমাদের জিততেই হবে। তা না হলে সকাল রা আমাদের কখনোই ক্ষমা করবে না।

মাকে মনে পড়ে

বলতে দ্বিধা নেই, ছোটবেলা থেকেই প্রচন্ড দুস্ট ছিলাম। হয়তো গ্রামে বড় হওয়ার কারণে প্রকৃতির উদ্দামতাই ভর করে থাকতো সবসময়। বাসায় আমার নামে আসা বিচারের অন্ত ছিলো না। যেকোন অঘটন ঘটিয়ে বাসায় এসে প্রথম যে কাজটা করতাম তা হলো কোন না কোনভাবে আম্মু কে একবার জড়িয়ে ধরা। এটা করতে পারলেই সাতখুন মাফ। বাকি সব সামাল দেয়ার দায়িত্ব আম্মুর।
মধবিত্ত ফ্যামিলিতে বড় হওয়ার কারনে অর্থের প্রাচুর্য আমাদের ছিলো না। তারপরও কখনো কোন কিছুর অভাব অনুভব করতে হয় নি। কোন কিছু চাইলে কিভাবে কিভাবে জানি ঠিকই ম্যানেজ করে ফেলত আম্মু। এটা করতে গিয়ে উনি যে নিজের সব স্বাদ আহ্লাদ বিসর্জন দিয়েছেন তা বুঝে উঠতেই অনেক সময় লেগেছে।

আম্মুকে ছাড়া একা ঘুমাতে পারতাম না। খেতে পারতাম না নিজ হাতেও। একারণেই কোথাও বেড়াতেও যাওয়া হত না। অথচ সেই আমাকেই বাসা ছাড়তে হল অল্প বয়সেই। ফটিকের মত একটা জীবন নিয়ে ঢাকায় চলে আসতে হল কলেজে পড়ার জন্য। এরপর ভার্সিটি। সময়ের সাথে সাথে অভ্যস্ত হয়ে উঠলাম মায়ের স্পর্শ বিহীন জীবনের একটা জীবনের সাথে। কিন্তু মনের গোপন কুঠুরিতে মায়ের জন্য হাহাকার এক মুহুর্তের জন্যও থেমে নেই, এ হাহাকার থামার নয়।

মাগো, বায়েজিদ বোস্তামীর মতো সারারাত তোমার শিয়রে পানির পেয়ালা হাতে দাড়িয়ে থাকার সুযোগ হয়নি। সুযোগ হবে না বিদ্যাসাগরের মতো স্রোতস্বিনী নদী পার হয়ে তোমার কাছে পৌছানোরও। তারপর জেনে রেখ মা, তুমি আছ আমার সমস্ত অস্তিত্বের সাথে মিশে। তোমার জন্যই আমার বেচে থাকা, ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ এই জীবনে নিরন্তর পথচলা।

পৃথিবীর সমস্ত মায়ের প্রতি রইলো শত সহস্র সালাম।।

রসিক বিএনপি

১)
 বিএনপি নেতা মওদুদ : "ক্ষমতায় গেলে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেক পরিবারকে বিশ লক্ষ টাকা দেয়া হবে। "
একটু ফিরে দেখা যাক,

2004 সালে তেজগাঁওয়ের ফিনিক্স ভবন ধসে নিহত হয়েছিল শতাধিক মানুষ। সঠিক সংখ্যা যদিও সরকারি হস্তক্ষেপের কারনে জানা যায়নি।
2006 সালে সাভারের স্পেক্ট্রাম ভবন ধসে নিহত হয়েছিল চারশতাধিক।
ছোট গণতন্ত্রের লঞ্চ এমভি কোকো ডুবেও নিহত হয়েছিল অসংখ্য মানুষ।
উপরোক্ত কোন ঘটনার সময়ই নিহতদের পরিবারকে বিশলাখ তো দূরের কথা, দুইলাখ টাকা করেও দেয়া হয়নি।
এই অধমের বক্তব্য, "পাগলে কি না বলে, ছাগলে কি না খায়। "


২)  
পৃথিবীতে সবচেয়ে দূর্ভাগা হচ্ছে সেই ব্যাক্তি যে তার জন্মদাতা পিতাকে নিয়ে গর্ব করতে পারে না। তারেকের মেয়েটার জন্য আমার খুব আফসোস হয়। মেয়েটার কপালটা এত্তো খারাপ কেন? 

৩)
একটা কথা কিন্তু আপনাকে মানতেই হবে দাদা, আপনি যদি কমেডি সিরিয়ালের ভক্ত হয়ে থাকেন তাহলে বিএনপি নেতাদের টকশো আপনার ভালো লাগবেই। কি সুন্দর ভাঁড়ের অভিনয় করে একেকজন। দিলদার, টেলিসামাদ সব ফেল।
আজ বিএনপির একনেতা টকশো তে বললেন তারেক জিয়া কে অপরাধী বললে নাকি সমগ্র বাংলাদেশকেই অপমান করা হয়। একথা বলে উনি নিজেই একটু মুচকি হাসি দিলেন। মানে সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন এখন হাসতে হবে, হাসুন।
গতকাল একনেতা তো আরো রসিক আচরণ করলেন। উনি পরিস্কার জানিয়ে দিলেন তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে তিনটা মামলা থাকুক আর তেরটা মামলাই থাকুক উনাকে কোনভাবেই গ্রেফতার করা যাবে না। পারলে তো উনি দলিল দস্তাবেজ বের করে দেখিয়ে দেন যে তারেক জিয়া কতটাকায় এই দেশটা কিনে নিয়েছেন।
এই অধমের এইসব কমেডি দেখতে ভালোই লাগে। এইসব দেখি আর ভাবি,
"সত্যিই লক্ষীন্দর, কি সুন্দর তোমার বেহুলার বাশি। "
৪)
আমার টেকাটুকা নাই। DHL এর ভাড়া দেয়ার মত টেকা থাকলে আমিও তারেক ভাইরে একখান উকিল নুটিশ পাঠায়া দিতাম। কেন উনি বাংলাদেশের গণতন্ত্ররে মাজাভাঙ্গা অবস্থায় রাইখা, দেশের ষোল কুটি মানুষরে এতিম বানায়া বিলেতে পইড়া আছেন? উনার অভাবে রাস্তার দুপাশের তারবিহীন খাম্বাগুলান আজ শোকে জর্জরিত, অগুনিত ব্যাবসায়ীরা ১০% হাতে লইয়া উনার খোজে ইতস্তত ঘুরে বেড়াইতেসে রাস্তাঘাটে, হাওয়া ভবনে আজ বহে না কুনু সুখের হাওয়া, মামুন ভাই আর বাবর ভাই কারাগারে বইসা উদাস মনে গান গায় "আমার বন্ধুয়া বিহনে গো,সহেনা পরানে গো..."। নাহ, আমি আর বলতে পারছিনা,আবেগাপ্লুত হয়া পড়সি,টিস্যু বক্সটা কইযে রাখলাম।

৫)
আজ থেকে বত্রিশ বছর আগে ঠিক কি হয়েছিল চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে? কি ভাবে খুন হয়েছিলেন ততকালীন রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমান? কারা খুন করেছিল তাকে? কেনইবা খুন করা হয়েছিল? সেই খুনীরা আজ কোথায়? সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার নাই কেন? এসব প্রশ্নের কোন উত্তর কি বিএনপি নেতারা দয়া করে আজকের কোন টকশো তে দিবেন ? ভাঙ্গা সুটকেসের কাহিনী শুনিয়ে মানুষের সহানুভূতি তো কম নেন নাই। এবার তাহলে সেই সুটকেসটা ভাংলো কিভাবে সেই গল্পটাও শুনান। নাকি কেঁচো খুঁড়তে গেলে সাপ বের হয়ে আসার সম্ভাবনা আছে?
গোলাপী, ইদানীং তো খুব কইরা কইতাসো তুমরা ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধের বিচার করবা। দুই দুইবার তো ক্ষমতায় ছিলা নিজের জামাইয়ের হত্যাকাণ্ডের বিচার টাও তো করতে পারলা না। আসলে তুমি করতে চাও না। তুমার পরাণ জিয়ার লাইগা কান্দে না, জাঞ্জুয়ার লাইগা কান্দে। জীবিত জিয়ার থাইকা মৃত জিয়াই তুমারে বেশি সুবিধা দিসে। এ মৃত জিয়ার কারনেই তোমার মত গন্ডমুর্খ এদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়া গেসো। আমরা সবই বুঝি, আমরা তো আর তুমার মতো নন মেট্রিক না।তুমার জন্য অধমের একটাই বাণী, "সত্যিই লক্ষীন্দর, কি সুন্দর তোমার বেহুলার বাশি। "

৬)
ম্যাডাম জিয়া পড়ালেখায় খুব একটা ভালো না হলেও স্কুল লাইফে দুইটা প্রবচন উনি খুব মন লাগায়া শিখছিলেন,একটা হলো, "মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশী। " আরেকটি হলো, "যার বিয়ে তার খবর নাই, পাড়া পরশির ঘুম নাই। "উনি আর উনার দলের নেতারা এই প্রবচন দুইটার বাস্তব রুপ দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগসেন এখন। একেই বলে অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী।

৭)
কি হইতাসে এইসব?সকালে রাজশাহীর এক হেফাজতী নেতা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করল কেন্দ্রীয় চার হেফাজতী নেতার বিরুদ্ধে। বিকালে বিএনপির গায়েবানা জানাজা নামাজের কর্মসূচী কে হারাম আখ্যায়িত করে তা বর্জন করল হেফাজত।  
অনুসিদ্ধান্তঃ মিঃ বিন আর থ্রি স্টুজেস এর প্রেতাত্মারা একসাথে ভর করসে বিএনপি আর হেফাজতের নেতাদের উপর।

৮)
বিএনপি নেতা দুদু , "হেফাজতের যেসব নেতা ঢাকায় এসেছেন তারা আমাদের মেহমান, তারা যেন নিজেদের অসহায় বোধ না করেন। যে যেভাবে পারেন খাবার, পানি দিয়ে তাদের সাহায্য করেন।"
এই চুতিয়ারে জিগাইতে মন চায়, দাওয়াত দিয়া সন্ত্রাসীদের ঢাকায় আনসোস কেন? মুরাদ থাকলে নিজেরা মাঠে নাম। অন্যের কাধে বন্দুক রাইক্ষা শিকার করবি আর কতদিন?
RIP BNP
৯)
চিকনা বুদ্ধিতে জোটসঙ্গী জামাতের ধারের কাছেও নাই বিম্পি। যেমন দেখেন জামাত ঈদের পর পরই দুইদিন হরতাল দিল। ঈদের আমেজের কারণে এই সময় রাজধানী সহ বড় শহরগুলোর রাস্তাঘাটে মানুষজন এমনিতেই কম থাকে। ফলে তারা প্রচার করল হরতাল সফল।
আর এদিকে গোলাপী বিবি তার চুতিয়া সাগরেদ দের কথা মাইনা বছরের পর বছর ধরে জাতির সবচেয়ে বেদনার দিনটা নিজের পাচ নম্বর জন্মদিন হিসাবে পালন করতেসে। এর জন্য সবাই তারে গালমন্দ করে, তাও তার লাজ শরম হয়না। অথচ জামাতের মত চিকনা বুদ্ধি খাটায়া গোলাপী যদি 14 ই ফেব্রুয়ারি রে নিজের জন্মদিন হিসাবে বাইচ্ছা লইত তাইলেই কেল্লাফতে হইত। সারাদেশের বেবাকতে মিইলা তার জন্মদিন পালন করত। পোলাপাইন জোড়ায় জোড়ায় ঘুইরা ঘুইরা তার জন্মদিন চিলিব্রেট করত। আর ম্যাডমের 69 তম জন্মদিন যে পোলাপাইন কেমতে পালন করত তা আর নাই বা বললাম। সমাঝদারের জন্য ইশরাই কাফি!


১০)
খালেদা জিয়ার মাধ্যমিক পরীক্ষার মার্কশীট দেখলেই উনার বেশ কয়েকটা জন্মদিনের কারণ বোঝা যায়। যে মানুষটা ইতিহাসে ১০ পাইসে তার পক্ষে কি নির্দিষ্ট করে একটা জন্মতারিখ এর কথা মনে রাখা সম্ভব? তাই, যে যখন যে জন্মতারিখ বলসে উনি সেইটাই মাইনা নিসেন। উনার কি দোষ বলেন?
পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলেও উনি উর্দুতে কিন্তু মাশাল্লাহ ভালো নম্বর পাইসেন। পাকিস্তান অথবা আফগানিস্তানে রাজনীতি করলে কোপায়া ভাজ কইরা ফেলতে পারতেন।
দুর্ভাগ্য যে উনার বাংলাদেশ রাজনীতি করতে হইসে। এটা উনার জন্য যতটা না হতাশার বাংলাদেশের জন্য তার থেকে অনেক বেশি হতাশার। অনেক বেশি দুর্ভাগ্যের ব্যাপার।
 
 
 


 

ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

 ১)
ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,এভারেস্ট বিজয়ী বীর সজল খালেদের মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করার জন্য। বাঙ্গালী বীরের জাতি। আমরা যদি আমাদের বীরদের যথাযথ মর্যাদা দিতে না পারি তাহলে কে পারবে?
জানি,এই মহৎ উদ্যোগের জন্য কোন পত্রিকায় স্তুতিবাক্য রচিত হবে না আপনাকে নিয়ে। টকশো গুলোতে নুন্যতম ধন্যবাদও দিবে না এদেশের তথাকথিত সুশীল বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়। তবুও আপনি এই দেশের মানুষের জন্য কাজ করেই যাবেন। আপনাকে যে করতেই হবে। আপনিই যে এদেশের অসহায় মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল।
( যারা এই উদ্যোগ কে সাধারন একটা উদ্যোগ ভাবছেন তাদের কাছে একটাই অনুরোধ,দয়া করে আর একটিমাত্র উদাহরন দেখান যে কোন দেশের সরকার প্রধান তার দেশের একজন এভারেস্ট বিজয়ীর লাশ নিজ উদ্দোগে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাবস্থা করেছে )


২)
একদিনে সরকারের তিন তিনটি কুটনৈতিক সাফল্যের খবর পাওয়া গেলঃ
- জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলাদেশের সৈন্য সংখ্যা। আপাতত 600-1000 সৈন্য বৃদ্ধি পাবে। আর ফিলিপাইন যদি তাদেরকে শান্তিরক্ষী বাহিনী থেকে প্রত্যাহার করে নেয় তাহলে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
 - সৌদি সরকার প্রবাসী বাংলাদেশী দের জন্য 'আকামা' পরিবর্তনের সুযোগ দিয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশীরা আগামী তিনমাসের মাঝে তাদের পেশা পরিবর্তন করতে পারবে। একই সাথে নতুন কাজের সুযোগও পাবে।
-মার্কিন সরকার পরিস্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে একাত্তরের মানবতাবিরোধী দের বিচারের ব্যাপারে তারা বাংলাদেশ সরকারকে সর্বাত্মক সহায়তা করবে। নিঃসন্দেহে উপরোক্ত তিনটি অর্জনই বর্তমান সরকারের কুটনৈতিক দক্ষতার নিদর্শন ।
আপনাকে স্যালুট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।। 
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।।

গোলাপীর দুদু সিরিজঃ ৪




১) সংবাদ সম্মেলনে গোলাপীর উপদেষ্টা দুদু,
"তারেক জিয়া দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের সিনিয়র মহাসচিব। আজকে দেশে আসলে, কাল নির্বাচন হলে, পরশু উনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। তাই উনার ব্যাপারে ভেবেচিন্তে কথা বলতে হবে। "মাইরালা, তোরা দুদু পোলাডারে গণতন্ত্র দিয়া পিডায়া মাইরালা। এর মাথা নস্ট হইয়া গেসে।


২) অনেক চিন্তা-ভাবনা করিয়া দেখিলাম একখানা পুস্তিকা রচনা করা এখন সময়ের দাবি। পুস্তিকাখানার নাম হইবে "এসো প্রধান মন্ত্রী হই" অথবা "প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সহজ উপায়"। গোলাপীর উপদেস্টা দুদু বইয়ের উপক্রমণিকা লিখিয়া দেয়ার ব্যাপারে সদয় সম্মতি দিয়াছেন। যদিও শর্ত জুড়িয়া দিয়াছেন উনাকে দিয়া মোড়ক উন্মোচন করাইতে হইবে। আমি চোখ বন্ধ করিয়া রাজি হইয়া গিয়াছি। সামনের বইমেলায় বেস্ট সেলার হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। পুস্তিকাখানা প্রকাশ করিয়াই একখানা কোচিং সেন্টার খুলিয়া বসিব যেখানে মাত্র তিনদিনে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার তরিকা শিখানো হইবে। প্রধান শিক্ষক হইবেন দুদু,অতিথি শিক্ষক জুনায়েদ বাবুনগরী। অনেকদিন পর টেকাটুকা কামনোর একটা ধান্দা পাইলাম, সকলে আমার জন্য দোয়া করিবেন।

গোলাপী বেগমের অপ্রকাশিত জীবনী

এই লেখাটি কাউকে কারো ব্যক্তিগত জীবনকে আঘাতের জন্য নয়। কারো পিতামাতাকে আঘাত করে কোনো লেখক বা কেউই কিছু করতে পারেনি। এই লেখাটির রেফারেন্স সংগ্রহ করা হয়েছে একটি বইয়ের থেকে। বইটি লিখেছেন পাকিস্তানী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ সিদ্দিক সালেক। সেই বইয়ের রেফারেন্সেই লেখা এটি। বইটি পড়ে সকলেরই খারাপ লাগবে কিছু মানুষের জন্য। আশা করি, সকলে উক্ত বইটি নিজ দায়িত্বে পড়বেন। (Reference : Book: War in 1965, Pakistan and India. By Siddik Salek)
খালেদা জিয়ার প্রয়াত মাতা যাকে আমরা তৈয়বা মজুমদার নামে চিনি, তার প্রকৃত নাম ছিল লক্ষ্মীরাণী মারমা। তিনি ছিলেন পরমা সুন্দরী ও যৌবনবতী। দার্জিলিংয়ের খোয়া অঞ্চলের উপজাতি সম্প্রদায়ের সমাজপতি হরিকৃষাণ বাহাদুরের বাড়িতে রক্ষিতা থাকা অবস্থায় তিনি দুটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। যাহাদের একজন খালেদা জিয়ার বড় বোন প্রয়াত খুরশীদা জাহান হক ও মেজ বোন সেলিমা ইসলাম বিউটি নামে সকলের কাছে পরিচিত।images
দুই কন্যা সন্তানের জননী হবার পর হরিকৃষাণ বাহাদুরের আনন্দভবন থেকে বিতাড়িত হয়ে তিনি দার্জিলিংয়ের ক্রিফটন চা বাগানের মালিক ব্রিটিশ বংশোদ্ভুত ইহুদী ধর্মাবলম্বী মিঃ রবার্ট উইলসনের রেস্ট হাউসে চাকরাণীর কাজ নেন। মিঃ উইলসনের দারোয়ানই হচ্ছেন খালেদা জিয়ার কথিত বাবা ইস্কান্দার মজুমদার, যাহার প্রকৃত নাম মুরলী মোহন মারমা। মিঃ রবার্ট উইলসনের মদ ও নারীর প্রতি প্রচণ্ড আসক্তি ছিল। তাঁর চাকরানী থাকাকালীন সময়েই খালেদা জিয়ার মাতা গর্ভবতী হয়ে পড়েন। এই বিষয়টি চা বাগানের কর্মকর্তা – কর্মচারীদের মধ্যে জানাজানি হয়ে গেলে মিঃ রবার্ট উইলসন নিজের ইজ্জত বাঁচানোর জন্য তাঁর দারোয়ান ছদ্মনামধারনকারী ইস্কান্দার মজুমদারকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে খালেদা জিয়ার মায়ের সাথে বিয়েতে রাজী করান। বিয়ের পরেও মিঃ রবার্ট উইলসনের সাথে খালেদা জিয়ার মায়ের নিয়মিত দৈহিক মিলন ঘটতো। চাকুরী হারানোর ভয়ে কথিত বাবা ইস্কান্দার মজুমদার এই বিষয়ে টু শব্দটিও করতেন না।
এমনি অবস্থার প্রেক্ষাপটে খালেদা জিয়া চা বাগানের দাই মরিসন সাংমার তত্ত্বাবধানে ১৯৪৫ সালের ১৩ই আগস্ট ও তাঁর ভাই সাঈদ ইস্কান্দার ১৯৪৭ সালের ১৫ই নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তাদের জন্মের পর পরই চা বাগানের কর্মকর্তা – কর্মচারীদের মধ্যে তাদের গায়ের রং ও চেহারা নিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন ওঠে। প্রকৃতপক্ষে খালেদা জিয়া এবং সাঈদ ইস্কান্দারের বাবা হচ্ছেন মিঃ রবার্ট উইলসন। মিঃ রবার্ট উইলসনের চেহারা ও গায়ের রংয়ের সাথে তাদের প্রচুর মিল রয়েছে। লোকজনের বলাবলিতে খালেদা জিয়ার কথিত বাবা ইস্কান্দার মজুমদার বেশ কয়েকবার চাকুরীর মায়া ছেড়ে বরং এলাকা ত্যাগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পালাতে গিয়ে বেচারা দুর্ভাগ্যজনকভাবে ব্যর্থ হন।
অবশেষে ১৯৫৭ সালে দার্জিলিংয়ের সীমান্ত পার হয়ে পঞ্চগড়ের বাংলাবন্দ সীমান্ত দিয়ে দিনাজপুর জেলার সেতাবগঞ্জের এক দরিদ্র কৃষকের বাড়িতে আশ্রয় নেন। খালেদা জিয়ার বয়স তখন মাত্র ১২ বছর। যৌবন ছুই ছুই করছে। কথিত বাবা ইস্কান্দার মজুমদার তখন বেকার। সেই সময়ে উক্ত এলাকার জোতদারদের দৃষ্টি পড়ে তৈয়বা বেগমের উপর এবং অল্পদিনের মধ্যেই মা তৈয়বা বেগম তার তিন মেয়ে যথাক্রমে খালেদা, খুরশীদা ও সেলিমাকে নিয়ে পৃথিবীর আদিমতম পেশা বেশ্যাবৃত্তিতে পুরোদস্তুর নেমে পড়ে। বেশ কিছুদিন আয় উন্নতি তথা রমরমা ব্যবসা চলার পর এলাকার লোকজনের কাছে হাতে নাতে ধরা পড়ে।
khaleda(1)অতঃপর সেতাবগঞ্জ জামে মসজিদের তদানীন্তন ইমাম মাওলানা হাবিবুর রহমান ও গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে এক শালিস বৈঠক বসে। শালিসে কথিত বাবা ইস্কান্দার মজুমদারসহ মা তৈয়বা বেগম, মেয়ে খালেদা, খুরশীদা, সেলিমা ও ছেলে সাঈদ ইস্কান্দারকে জুতাপেটা করা হয় এবং তিন দিনের মধ্যে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়। কোনও উপায় না দেখে, খালেদার কথিত বাবা দিনাজপুর শহরের মুন্সীপাড়ার এক বস্তিতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। দিনাজপুর শহর থেকে সেতাবগঞ্জের দূরত্ব মাত্র কয়েক কিলোমিটার। তাই সেতাবগঞ্জের ঘটনা যাতে জানাজানি না হতে পারে সেই ভয়ে কথিত বাবা ও মার নাম পাল্টানোর পাশাপাশি খালেদার নতুন নামকরন করা হয় পুতুল। কিন্তু কথায় আছে, “চোর না শুনে ধর্মের কাহিনী।” অভাবের তাড়নায় মুন্সীপাড়ায় এসেও সেই পুরাতন ব্যবসা চালাতে থাকে। কিন্তু বিধি বাম! ছোট্ট শহর দিনাজপুর, তাই ঘটনা আর চাপা থাকেনা।
সীমান্তবর্তী শহর দিনাজপুরে তখন পাকিস্তানী খান সেনাদের সেক্টর হেডকোয়াটার ছিল। সন্ধ্যা হলেই বেলুচ, পাঠান, পাঞ্জাবী খান সেনাদের আগমন ঘটতো সেখানে। এই বস্তিতেই মা ও মেয়ে খালেদা, খুরশীদা, সেলিমা তাদের সঙ্গে ফষ্টিনস্টি করতো আর দু’হাতে টাকা কামাই করতো। আয় উপার্জন ভালো হওয়াতে কয়েক মাসের মধ্যেই দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ির একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে গিয়ে তারা উঠে। পরে সরকারী বন্দোবস্ত নিয়ে স্থায়ীভাবে এখানে বসবাস করতে থাকেন। বর্তমানে দিনাজপুরে যেটি খালেদা জিয়ার মায়ের বাড়ি নামে পরিচিত- এটিই সেই বাড়ি।
এই বাড়িতেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তৎকালীন ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমান ১৯৬০ সালে প্রথম এসেছিলেন দুই পাঠান সেনা অফিসার বন্ধুকে নিয়ে আমোদ ফুর্তি করতে। বেশ কয়েকবার আসা যাওয়ার পর মা ও মেয়ে খালেদার ছলনায় জিয়াউর রহমান আটকে যান। এক সন্ধায় জিয়া একা আমোদ ফুর্তির জন্য আসলে বালুবাড়ি মহল্লার ছেলেরা পূর্ব সিদ্ধান্ত মোতাবেক কাজী ডেকে এনে খালেদার সাথে বিয়ে পড়িয়ে দেন।
১৯৬৪ সালের শেষদিকে জিয়াউর রহমান খালেদাকে নিয়ে পাকিস্তান চলে যান। সেখানে করাচীতে তাঁর ভালো পোস্টিং হয়। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধ শুরু হয়। জিয়া খেমকারীর রনাঙ্গনে বেদায়ান-এ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি ব্যাটিলিয়নের কমান্ডার হিসাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। কিশোরী বয়স থেকেই যে খালেদার পুরুষ মানুষের সাথে শোয়া নিত্যদিনের অভ্যাস, সে কি করে একা থাকে? কয়েকদিন যেতে না যেতেই করাচি ক্যান্টনমেন্টের ৫৫ নং ফ্রন্টিয়ার ব্রিগেডিয়ার সুবেদার মেজর পাঞ্জাব শার্দূল মুশতাক খানের সাথে পালিয়ে গিয়ে খালেদা দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। যুদ্ধ শেষে জিয়াউর রহমান স্ত্রী বিয়োগে ভেঙে পড়লে ঊর্ধ্বতন পাক সেনা কর্মকর্তারা মধ্যস্থতা করে খালেদাকে আবার জিয়ার কাছে ফেরত দেয়। (তথ্য সুত্রঃ Book: War in 1965, Pakistan and India. By Siddik Salek, Page No. 145)
1971 সালে পাকিস্তানি এজেন্ট হিসাবে জিয়া আমাদের মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। জিয়া খালেদার চরিত্র সম্পর্কে অবগত ছিলেন বলেই তাঁকে সঙ্গে নেবার আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসই খালেদা জিয়া পাক সেনা কর্মকর্তাদের সাথে আনন্দ স্ফূর্তি ও ফষ্টিনষ্টি করে সময় কাটান। বর্তমান হোটেল শেরাটন তদানীন্তন হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের সুইমিং পুলে সুইমিং কস্টিউম পড়া পাকিস্তানী ব্রিগেডিয়ার জান জুয়ার সাথে আলিঙ্গনাবদ্ধ হাস্যউজ্জ্বল ছবিই তার সাক্ষ্য প্রমাণ বহন করে। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে খালেদা জিয়া গর্ভবতী হয়ে পড়েন। যার কারণে স্বাধীনতা লাভের পর জিয়াউর রহমান তাঁকে ঘরে তুলতে অস্বীকার করেন। কিন্তু শেখ মুজিবের ধমকে মেজর জিয়া খালেদাকে ঘরে নিতে বাধ্য হয়। পরে প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডাঃ টি এইচ খান খালেদা জিয়াকে ১৯৭২ সালের গোঁড়ার দিকে এ্যবরশন করান। (এ্যবরশনের ঘটনা যদি কারো বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়, তাহলে ডাঃ টি এইচ খান এখনো জীবিত আছেন তাঁর সাথে যোগাযোগ করলেই বিস্তারিত জানতে পারবেন।)images (2)
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ডাঃ বদরুদ্দুজা চোঁধুরীকে বাদ দিয়ে কোন যোগ্যতার কারণে কে এম ওবায়দুর রহমানকে বিএনপির মহাসচিব বানানো হয়েছিল। যোগ্যতা একটাই- ওবায়দুর রহমান সেক্সি পুরুষ। এ নিয়ে ওবায়দুর রহমানের দাম্পত্য জীবন ভেঙ্গে যাবার উপক্রম হয়েছিল। আবার কি কারনে ওবায়দুর রহমানকে মহাসচিব পদ থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল? এ নিয়ে বিদেশী দূতাবাসের এক পার্টিতে ব্যারিস্টার মওদুদ, ব্যারিস্টার হাসনাত ও ওবায়দুর রহমানের সাথে কথা হচ্ছিলো। ব্যারিস্টার আবুল হাসনাত কথাটা অকপটে বলেই ফেললেন, ওবায়েদ ভাইয়ের যদি ডায়াবেটিস না হতো, তাহলে খালেদা জিয়া কি তাঁকে বাদ দিতো।
খালেদা জিয়ার জীবন থেকে ওবায়দুর রহমান চলে যাবার পর তার কাছে আসে জনৈক কর্নেল (অবঃ) আব্দুর রশীদ নামে এক পুরুষ। খালেদার পুত্র তারেকেরও এই ব্যাপারে কোনও আপত্তি ছিলনা। কারন কর্নেল (অবঃ) রশীদের ছিল সুন্দরী এক মেয়ে। তাঁর প্রতি নজর পড়ে তারেকের। মায়ের কাছে যায় শ্বশুর, আর শ্বশুরের মেয়ে আসে তারেকের কাছে। ক্যান্টনমেন্টের মইনুল হোসেন রোডের ৬ নং বাড়িটিতে একদিন মুখোমুখি দেখা হয়ে যায় মেয়ের সাথে কর্নেল (অবঃ) রশীদের। সঙ্গে সঙ্গে কর্নেল (অবঃ) রশীদ তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে। পেয়ারার ডাল দিয়ে শুরু করে ধুমধাম মারপিট। ঘটনাটি পত্রিকায় ফাঁস হয়ে যাবার পর খালেদা জিয়া পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে বললেন, তাঁকে প্রাণনাশের চেষ্টা করেছিল জনৈক কর্নেল (অবঃ) রশীদ। মামলাও করেছিলেন। গ্রেফতারও হয়েছিলেন কর্নেল (অবঃ) রশীদ। তারপরে খালেদা জিয়া দুইবার প্রধানমন্ত্রী হলেন কিন্তু প্রাণনাশের মামলাটির কি হল বাংলাদেশের মানুষ আজো জানতে পারেনি। মিথ্যার কি বেসাতি!
বেগম খালেদা জিয়া জীবনে বহু পুরুষকে তৃপ্ত করেছেন, মনোরঞ্জন করেছেন, নিজেও সুধা পান করেছেন। যাইহোক, জিয়াউর রহমানের পর যে ব্যক্তিটি দীর্ঘদিন যাবত খালেদা জিয়াকে ভোগ করে আসছেন, তাঁর নাম ফালু। মূর্খ ফালুকে খালেদা জিয়া তার পিএস পর্যন্ত বানিয়েছেন। নতুন নাম রেখেছেন মোসাদ্দেক হোসেন। ফালুর সাথে খালেদার নষ্টামির কথা বাংলাদেশের অবুঝ শিশুও জানে। ফালু ছিলেন, ফালু আছেন এবং শেষ পর্যন্ত বোধহয় ফালুই থাকবেন তার জীবনে।

জয়নাল ভাইয়ের কুকীর্তিঃ ১

চারদিকে জয়নাল ভাইয়ের পরকীয়ার ফোনটেপ নিয়ে মাতামাতি। কি আছে এতে ? না,বেশি কিছু না। জয়নাল ভাই ভালোবাসার নিদর্শন স্বরূপ উনার জানেমানকে একটা বাবু দিতে চেয়েছেন আর উনার জানকে একটু বুকে নিতে চেয়ছেন।

আসুন দেখা নেয়া যাক জয়নাল ভাইয়ের ফোনটেপের চুম্বক অংশ

জয়নালঃ তুমি কাট,আমি করতেসি
নারীকন্ঠঃ না অসুবিধা নাই,অসুবিধা নাই
জয়নালঃ না না তুমি কাট
নারীকন্ঠঃ আরে অসুবিধা নাই।
জয়নালঃ বলছি বাবুর বয়স কত এখন?
নারীকন্ঠঃ এই অক্টোবরে পাচ বছর হবে,অক্টোবরের আট তারিখ।
জয়নালঃ তোমাদের কি পাচ বছর হয়ে গেছে?
নারীকন্ঠঃ এই অক্টোবরে পাচ বছর হবে আরকি,পূর্ণ হবে।
জয়নালঃ মাম্মা (!) Thank you, তাইলে তো এখন আরেকটা বাবু দরকার।
নারীকন্ঠঃ (হাসি) বাবু টাবু এখন আর দরকার নাই। অনেক ইয়েতে আছি,টেনশনে আছি।
জয়নালঃ না,অইটা আমার আমার।
নারীকন্ঠঃ আমার মানে,
জয়নালঃ হ্যাঁ, আমার আমার।
নারীকন্ঠঃ কি আমার,বুঝি নাইতো।
জয়নালঃ বাবু নেক্সটা আমার।
নারীকন্ঠঃ ও তাই । আচ্ছা আপনাকে দিয়ে দিমুনে।
জয়নালঃ হু,নেক্সটা আমার তো। কেন,আমার জানকে তো আমার জানেমানকে রাখতে হবে না? আমার বাবুটাকে আনতে হবে না। নাইলে আমার জানেমান আমাকে ভুলে যাবে।
নারীকন্ঠঃ ভাইয়া আপনি গাড়িতে না? কি বলতেসেন?
জয়নালঃ না না না বোকা,গাড়ির পিছনে আমি। গান শুনতেসি,কেউ টের পাবে না। কার সাথে কথা বলতেসি কেউ বুঝতে পারবে না।
নারীকন্ঠঃ আপনার পার্সোনাল ড্রাইভার উনি?
জয়নালঃ হ্যাঁ, আমার ড্রাইভার খুব বিশ্বস্ত। আমার আর্মস টার্মস সব তার কাছে থাকে।
নারীকন্ঠঃ হু
জয়নালঃ তুমি এইটা মনে রাখবা। সবসময় মনে রাখবা। তুমি শিক্ষিত মানুষ,আমি শিক্ষিত মানুষ। তোমার ইজ্জত আল্লাহর চেয়ে,রাসুলের চেয়ে পরে (নাউজুবিল্লাহ)।
নারীকন্ঠঃ কি ?
জয়নালঃ তোমাকে আমার বুকের মাঝে নিয়েছি একটাই কারণে। এই রকম মানুষ আমি আজকে আমার বিশ বছরের রাজনীতির জীবনে আমি দেখি নাই। That’s enough.
নারীকন্ঠঃ (হাসি) দেখেন নাই ? অনেক দেখসেন। আপনাকে দেখে তো কাঁচা মনে হয় না।
জয়নালঃ না না দেখসি। অনেক দেখসি। কিন্তু একজন মানুষ এত আন্তরিক হতে পারে ? তোমার কি আছে বল। তুমি বল।
নারীকন্ঠঃ জী ?
জয়নালঃ আমার মত লোক ঠিকই পাগল হইসে।

(এই পর্যায়ে নারীকন্ঠ গাড়ির ড্রাইভারে সাথে কথা বলা শুরু করে এবং দশ মিনিট পর ফ্রী হয়ে ফোন দিবে বলে রেখে দেয়। রাখার আগে অবশ্য সরি বলতে ভুলে নাই,শত হইলেও চীফ হুইপ মানুষ)
http://blog.digitalbangla24.com/wp-content/uploads/2013/05/jaynul-abdin-Faruque-Phone-Skandal.mp3
71

জয়নাল ভাইয়ের কুকীর্তিঃ ২

আবারো জয়নাল ভাই। এটি গত ১৯/১২/২০১২ ইং রাত ৮:১২ মিনিট এর কথোপকথন। এর জন্য উনাকে অবশ্য খুব একটা দোষ দেয়া যায় না। শত হলেও উনারা হরতাল টরতাল করে অনেক প্রেশারে থাকেন। এরপরে একটু মনোরঞ্জন না হলে কি চলে? এতদিন জানতাম সুখে থাকলে ভূতে কিলায়,এখন তো দেখি দৌড়ের উপর থাকলেও অনেক কিছুই কিলায়।

আসুন দেখে নেয়া যাক নতুন ফোনটেপে কি আছেঃ

(মোবাইলে রিং হওয়ার শব্দ)
নারীকন্ঠঃ হু ভাইজান
জয়নালঃ হ্যালো কই?
নারীকন্ঠঃ হ্যা হ্যালো
জয়নালঃ কোথায়?
নারীকন্ঠঃ এইযে বাসায় আছি আমি
জয়নালঃ কোথায় বাসা ?
নারীকন্ঠঃ বনশ্রীতে
জয়নালঃ উম,কি কেমন জিনিস ?
নারীকন্ঠঃ উম,আপনি লইয়া গেলেই দেখবেন
জয়নালঃ পেশাদার ?
নারীকন্ঠঃ না না পেশাদার না।
জয়নালঃ অ্যাঁ
নারীকন্ঠঃ পেশাদার না, পেশাদার না
জয়নালঃ কি হাউজওয়াইফ ?
নারীকন্ঠঃ না হাউজওয়াইফ না,পেশাদার না। এরা পড়াশুনা করে
জয়নালঃ কোথায় ?
নারীকন্ঠঃ কলেজে পড়ে
জয়নালঃ আরে এসব বলে আরকি
নারীকন্ঠঃ বলে কি? এরা কি নিয়মিত এসব করে নাকি? এরা পারিবারিকে থাকে। নিজেদের বাসায়, পরিবারে থাকে।
জয়নালঃ থাকলেও বাইরে যায় না ?
নারীকন্ঠঃ বাইরে যায় না। আমি যতটুকু জানি বাইরে যায় না। মানে যতটুকু এদের দেখসি, কথা বলসি, এরা কিন্তু বাইরে যায় না।
জয়নালঃ কেমন?
নারীকন্ঠঃ ভালো আছে, সুন্দর আছে।
জয়নালঃ বয়স ?
নারীকন্ঠঃ বয়স,অল্প বয়স
জয়নালঃ তাইলে কয়টায় ?
নারীকন্ঠঃ বনশ্রীতে আছে
জয়নালঃ কয়টায়?
নারীকন্ঠঃ ও তাইলে তো হরতাল ছাড়ার আগে বের হতে পারব না। হরতাল শেষ হলে
জয়নালঃ হরতাল তো কালকে বারোটা একটা পর্যন্ত
নারীকন্ঠঃ ওইতো বারোটা একটা পর্যন্ত হইলে এই ধরেন আমি বাসা থেকে বের হবো সাড়ে বারোটার দিকে। তারপর অদের বাসায় যাব। অরে নিয়ে বের হতে একটা দেড়টা বাজবে।
জয়নালঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
নারীকন্ঠঃ আচ্ছা। ওটা হচ্ছে কয়তলায় না আপনে। দুতলায় না কয়তলায় যেন?
জয়নালঃ ছয় নম্বর বিল্ডিং,১০৩ নম্বর
নারীকন্ঠঃ ছয় নম্বর বিল্ডিং ১০৩
জয়নালঃ ফাস্ট ফ্লোর
নারীকন্ঠঃ ফাস্ট ফ্লোর। খালি আমি ভুইলা যাই
জয়নালঃ ঠিক আছে
নারীকন্ঠঃ আচ্ছা, বাকিটা আমি সাক্ষাতে এসে বলবো নে। আচ্ছা ।।

https://soundcloud.com/bristi-balika

জয়নাল ভাইয়ের কুকীর্তিঃ ৩

বাজারে এলো জয়নাল ভাইয়ের নতুন টেলিকথন। কি অপূর্ব জয়নাল ভাইয়ের মেয়ে পটানোর প্রতিভা। কি দারুণ ভাবেই না নিজের প্রশংসা করেন। কি অবলীলায় মিথ্যা বলে যান। কি সুন্দর সুন্দর উপমা ব্যাবহার করেন। কি নাটকীয় ভাবে অভিমানের ভান করেন।
আজ থেকে জয়নাল ভাইকে জাতীয় “লাভগুরু” উপাধি দেয়া হোক। উনার কাছে শিক্ষা পেলে জাতি হয়ে উঠবে প্রেমময়। দেশ হয়ে উঠবে বাবুময়। জয় বাবু জয়নালের জয়।

জয়নালঃ লাইনটা কেটে গেসে, আমি এখন চেস্টা করতেসিলাম।
নারীকন্ঠঃ না অসুবিধা নাই,আপনি তো সবসময় করেন। এখন আমি করি।
জয়নালঃ না আমি করি আমি করি। তোমার পয়সা নস্ট হবে তো।
নারীকন্ঠঃ না অসুবিধা নাই। আমার পয়সা নস্ট হলে বাংলাদেশ থেকে যেরকম ফ্লেক্সিলোড করেন না,এরকম ই-ফ্লেক্সিলোড করে দিবেন।
জয়নালঃ তা তো হবেই,ইনশাল্লাহ ইনশাল্লাহ।
নারীকন্ঠঃ আরে পাম্প দিসি,বাংলাদেশ থেকে ই-ফ্লেক্সিলোড করা যায় নাকি? এটা তো শুধু বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশে।
জয়নালঃ ডোন্ট ওরি ডোন্ট ওরি।
নারীকন্ঠঃ আপনি নাস্তা করসেন?
জয়নালঃ না এখন উঠসি মাত্র, উঠে হাটতেসি। না না তুমি যদি একথা বল, সকালে উঠে যদি এই কথা বলে তো মনটা খারাপ করে দিলা।
নারীকন্ঠঃ কি বলসি ভাই?
জয়নালঃ না না তুমি বলসো আমার জান তো আমার কাছে।
নারীকন্ঠঃ তো কাছে কিনা বলেন? সারাজীবন তো সংসার করে আসলেন, উনা জান হবেন না?
জয়নালঃ না সারাজীবন সংসার করলেই কি অন্যের সাথে বন্ধুত্ব করা যায় না?
নারীকন্ঠঃ যায় না কেন যায়। অবশ্যই যায়।
জয়নালঃ ওয়েস্টর্ন কান্ট্রিতে থাইকা, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশে থাইকা যদি এই উত্তর দাও তাইলে মনটা খুব খারাপ হয়ে যায়।
নারীকন্ঠঃ শুনেন ভাই মন খারাপ কেন করতেসেন? আমি তো সিরিয়াসলি বলি নাই।
জয়নালঃ না সকালে তুমি আমার মনটা খুব খারাপ করে দিসো, ভোরবেলায়।
নারীকন্ঠঃ মন খারাপ হয়ে গেসে?
জয়নালঃ প্রতি মুহূর্তে দুইবার ফোন করি তিনবার ফোন করি।
নারীকন্ঠঃ ওইটা আমার সৌভাগ্য। আমি সবসময় বলি।
জয়নালঃ তোমার গলার আওয়াজ শোনার জন্য ফোন দিয়া বসে থাকি আর তুমি বল জান দিতে পারি নাই। তোমাকে দেখার জন্য আসতেসি আমি শিকাগো, এখন তুমি কি মনে কর? ঠিক আছে লাগবে না।
নারীকন্ঠঃ আমাকে দেখার জন্য? এই ওয়েস্টার্ন আমেরিকাতে কত সুন্দর সুন্দর মেয়ে আছে।
জয়নালঃ শোন যতই থাকুক যতই থাকুক,বুঝছো। এই পৃথিবীতে এই আমেরিকাতে আমি কত হাজারবার গেসি তার ঠিক নাই। কিন্তু আমি জীবনে কোন মেয়ের দিকে তাকাই নাই। এখন তুমি যদি আমাকে ওয়াদা করতে বল আমি ওয়াদা করতে পারি যে, ফারুক সাহেবের এমন কোন চরিত্রও নাই,এমন কোন মদও খাই না, কোন লেংটা ক্লাবেও যাই না শুধু ক্যাসিনোতে যাই। আড্ডা দেই, বাসায় আসি। জীবনে কেউ কোনদিন বলতে পারবে না। আজকে আমি ত্রিশ বছর এমপি, যখন আমার বয়স বাইশ বছর তখন আমি এমপি। এখন আমার বয়স চুয়ান্ন বছর শেষ হচ্ছে। নেভার কেউ বলতে পারবে না যে আমি তার দিকে তাকাইসি। কিন্তু আমার জীবনে, তুমি একটা কথা বলসিলা যে দুইদিন আগে কেন পরিচয় হলো না । আমি তোমাকে বললাম তো আগে যদি পরিচয় হতো আমি তোমাকে মাথার উপর রাখতাম,মাথার উপর।
নারীকন্ঠঃ আমি তো সেইরকম মেয়ে না, আমাকে কেন বড় লজ্জা দিতেসেন?
জয়নালঃ আমি জানি না আমি কেন তোমাকে। তুমি কিরকম না, তোমার দৃষ্টিতে তুমি কিরকম না কিন্তু আমার দৃষ্টিতে তুমি একটা আটলান্টিক সাগর।
নারীকন্ঠঃ ভালো বলসেন।
জয়নালঃ দ্যাটস এনাফ। আমি জানি না আমাকে তুমি কতটুকু ভালবাস, কতটুকু স্নেহ কর আমি জানি না। কিন্তু এতটুকু মনে রেখ মানুষের জীবনে এইটা একবারেই আসে দুইবার আসে না।
নারীকন্ঠঃ আপনি অনেক মায়া লাগায়া কথা বলেন। আমি জানি না কেন প্রথম থেকেই কথা বলতে বলতে এত সহজে মিশে যান। মানে খুব তাড়াতাড়ি কাছে চলে আসেন। আমি নিজেও বুঝি নাই এভাবে আপনার সাথে কথা বলব। এত ক্লোজলি, এত ক্লোজভাবে কথা বলব। আমি নিজেও চিন্তা করি নাই সেটা।
জয়নালঃ সেটা তো নির্ভর করবে তোমার উপর। আমার উপর না। কিন্তু আমি তোমাকে কতটুকু ভালোবাসি কতটুকু স্নেহ করি টেলিফোন করে বুঝবানা সেটা। তুমি জান,তুমি আমাকে যেদিন তোমার বাসায় ইফতর খাইতে গেসি। মনে পড়ে তোমার, মনে কইরো এইগুলা। আমার কিন্তু সব লিখা থাকে, আমার স্মৃতিশক্তি অনেক ভাল তুমি জান?
নারীকন্ঠঃ সেটা আমি জানি, রহমতকেউ আমি বলসি সেটা অন্য একটা কারণে যে আপনার স্মৃতি শক্তি অনেক ভাল অনেক কিছু মনে ঠাকে।
(লাইন কেটে গেলো)
লিঙ্কঃ https://soundcloud.com/bristi-balika/vtdebh5em5qd

শুক্রবার, ২৪ মে, ২০১৩

একজন সুখী মানুষের গল্প

রিকশায় উঠে চালকের সাথে কথা বলা আমার অনেক পুরানো অভ্যাস।এভাবে কথা বলে অনেক মানুষের সুখ,দুঃখ আর স্বপ্নের কথা জানতে পেরেছি। বেশ কয়েক জনের সাথে মাঝে মাঝে যোগাযোগ ও হয়। আজ এমন একজন মানুষের সাথে কথা হল, যার সাথে কথা বলে নিজেই গর্বিত হয়েছি।একজন পরিপূর্ণ সুখী মানুষ দেখার অনেক ইচ্ছে ছিল,আজ সে সাধ পূরণ হল।শুনুন সেই অসাধারন মানুষটির কথা।
উনার নাম জিন্নত ভাণ্ডারী। বয়স,আনুমানিক ৬০। দেশের বাড়ি শরিয়তপুর। ঢাকায় আছেন ২৫ বছর ধরে,থাকেন কামরাঙ্গিরচর।২ ছেলে,২ মেয়ে।সবার বিয়ে দিয়েছেন,নাতি নাত্নি ও আছে। ছেলেরা উনার সাথেই থাকে। এক ছেলের মুদির দোকান আছে,আরেক ছেলে মুরগির বেবসা করে। কামরাঙ্গিরচরে উনার ৩ কাঠা জমি আছে,নিজের আছে ৬ টি রিক্সা। উনার স্ত্রী সাড়ে ৭ হাজার টাকা বেতনে মিটফোর্ডে এক ক্লিনিকে কাজ করেন। এতসব শুনে জিজ্ঞেস করলাম,"চাচা,আপ্নার তো তেমন অভাব নেই।এই বয়সে এত কষ্ট করে রিক্সা চালান কেন ?" উনি বললেন," বাজান,কাজ না কইরা থাকতাম পারি না। ছেলেরাও বকাঝকা করে রিক্সা চালাই বইলা, কিন্তুক আমার ঘরে বইয়া থাকতে ভাল্লাগেনা। যতদিন শইল্লে কুলায় রিক্সা চালায়া যামু।" কিছুক্ষন পর আবার জিজ্ঞেস করলাম,"চাচা আপনি কি সুখী"। উনি উত্তর দিলেন,"আমার সুখের কোন অভাব নাই বাজান"। আল্লাহ তাআলা এই মহান আলকিত মানুষটিকে দীর্ঘজীবী করুন আর আমাদের সবাইকে উনার মত পরিশ্রমী হতে সাহায্য করুন। তাহলেই আমরা পারব এই দেশটাকে সুন্দরভাবে গড়তে।

সেলাই দিদিমনিদের দুঃখগাথা

আজ চারদিন হলো আমার মেয়েটার কাছ থেকে আব্বা ডাক শুনিনা। আমার মেয়ে তরু, মাত্র তিন বছর বয়স। এত আহ্লাদী হয়েছে আমার মেয়েটা, আমাকে না দেখে ঘুমাতেই পারে না। ওর জন্যই তো গার্মেন্টস এর কাছেই একটা ঘর ভাড়া নিতে হল যেন একসাথে থাকতে পারি। চার হাজার টাকা বেতনের মধ্য থেকে বারশো টাকা ঘর ভাড়ায় চলে যাওয়ার পর মাস চালাতে খুব কস্ট হয়। তারপর ও সারাদিন গার্মেন্টস এর কাজ শেষ করে ঘরে ফিরে যখন মেয়ের মুখ দেখি তখন সব কস্ট দূর হয়ে যায়। আচ্ছা, তরু কি চারদিন ধরে না ঘুমিয়েই আছে, ও তো আমাকে না দেখে ঘুমাতেই পারে না।

ভালোবাসার টানে নিজের পরিবার ছেড়ে আমার কাছে চলে এসেছিল তরুর মা। দুবার ম্যাট্রিক ফেল করা একটা বেকার ছেলের জন্য কেন যে সে পাগল হয়েছিলো আল্লাই জানে। ওর মুখের দিকে তাকিয়েই আমি সব কস্ট ভুলে গিয়েছিলাম। গার্মেন্টস এর ফোরম্যান এর চাকরি করে দিব্যি চলে যাচ্ছিল আমাদের দিন। তরুকে নিয়ে আমাদের সুখের সংসার। আচ্ছা, ওদের কে কি আর কখনোই দেখতে পাব না?

গত চারদিন ধরে রাপা প্লাজার সিড়ি ঘরে আটকে আছি আমি সহ আরো সাতজন। আমার পায়ের উপর পড়ে আছে একটা পিলার, একটু ও নড়তে পারছিনা। প্রথম দিকে খুবই ভয় পেয়েছিলাম সবাই। অনেক কান্নাকাটি আর চিৎকার করেছি উদ্ধার পাবার জন্য। না, আমাদের আর্তনাদ বিধাতার কাছে পৌঁছে নি। আমরা তো ছোটলোক, আমাদের আর্তনাদ স্রষ্টার কাছে এত সহজে পৌঁছায় না। একে একে সবাই চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে। সবার শেষে গেল কামাল। আমার হাত ধরে বলে গেলো বেচে থাকলে তার পংগু বাবাকে যেন আমি দেখে রাখি। আচ্ছা, আমারও তো যাবার সময় হয়ে এলো,তরু আর তরুর মাকে দেখে রাখার কথা আমি কাকে বলে যাব?

গার্মেন্টস গুলোয় নিয়মিত দুর্ঘটনা ঘটছে, তবু আমাদের মত শ্রমিকরা শুধু পেটের দায়ে এখানে কাজ করে। আমরা নাকি দেশের ফরেন রিজার্ভ বাড়াই, অথচ আমাদের রিজার্ভের খাতা সবসময় শুন্যই থাকে। এই ঘটনা নিয়ে কিছুদিন অনেক আলোচনা হবে, অনেক মিটিং মিছিল আর রাজনীতি হবে। তারপর কিছুদিন পর সবাই ভুলে যাবে আমাদের মত ছোটলোকদের কথা। আমার তরু আর তরুর মা কে দেখার কেউ থাকবে না। আল্লাহ তুমিই ওদের দেখো, আমাদের তো তুমি ছাড়া আর কেউই নেই।

আর ভাবতে পারছিনা। চারপাশ অন্ধকার হয়ে আসছে। ওইতো কামাল আমাকে ডাকছে। আমাকে মাফ দিস তরু, আমাকে মাফ করে দিও তরুর মা।

বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০১৩

গোলাম আজমের কবিতা || কেউ কথা রাখেনি



কেউ কথা রাখেনি, চল্লিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি
ছেলেবেলায় এক নূরানী সময়ে পাকি বাবারা বলেছিলো
তোকে পূর্বের রাজা বানিয়ে দিবো, আরামচে জর্দ্দা দিয়ে পান খাবি
তারপর কতদিন পান খেয়ে ঠোঁট লাল করিলাম, এক বিধবা ছাড়া আর কাউকে পেলাম না
সিংহাসনতো দূরের কথা।

পশ্চিমের জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেছিল, বড় হও গোলামের বাচ্চা
পাছায় চর্বি জমিয়ে নাও- আমি দু’টা থাপ্পড় দিবো, একটু মলে দিবো
তুমিও রাজা হয়ে তোমার গেলমানদের একটু থাবড়ে দিও, মলে দিও !
জুলফিকার আলি, আমি আর কত বড় হবো ? আমার চারপাশে এখন শতশত ডিম
আর কতোটি ডিম তাড়া করলে তারপর তুমি আমায় সিংহাসনের পায়া দেখাবে ?

একটাও রয়্যাল ছাগু কিনতে পারিনি কখনো
কাঠি-লজেন্স দেখিয়ে দেখিয়ে পুটকী মেরেছে মেজর জিয়ার সেনারা
ভিখারীর মতন সৌদী বাদশাহর গেটে দাঁড়িয়ে দেখেছি ভেতরে গেলমানের নাচ
অবিরল রঙ্গের ধারার মধ্যে সোনার মতো ফর্সা বালকেরা কতরকম আমোদে হেসেছে
আমার দিকে তারা ফিরেও চায়নি !
নিজামী আমার কাঁধ ছুঁয়ে বলেছিলেন, দেইখ্যেন, একদিন আমরাও…
নিজামী এখন জেলে, আমাদের দেখা হয়নি অনেকদিন
সেই রয়্যাল ছাগু, সেই কাঠি-লজেন্স, সেই গেলমানের নাচ
খালেদা জিয়া ফিরিয়ে দেয় না !

হাতের মুঠে সুগন্ধি রুমাল রেখে খালেদা বলেছিল,
যেদিন মুক্তিযুদ্ধ ধুয়ে মুছে ফেলতে পারবে, সেদিন সত্যিকারের ভালবাসবে
আমার পাঞ্জাবীতেও এরকম আতরের গন্ধ হবে !
ভালবাসার জন্য আমি ফেয়ার এন্ড লাভলী মেখেছি
এখনো চুষে যাচ্ছি পাকিদের কাঠি লজেন্স
বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি ডজন খানেক আইনজীবি
তবু কথা রাখেনি খালেদা, এখন তার মাথায় শুধুই তারেকের চিন্তা
এ যেন এক অচেনা নারী !
কেউ কথা রাখেনি, চল্লিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি !

কার্টেসি - দৈনিক মগবাজার

গোলাপীর দুদু সিরিজঃ ৩

আজ সকালে দুদু আর গোলাপীর ফোনালাপ :

ম্যাডাম, অবস্থা তো ভালো না!

কেন নতুন কইরা কি হইলো আবার?

বাকশালী সরকার তো সমাবেশ করার করার অনুমতি দিল না।

এতে খারাপের কি দেখলা তুমি? এতে তো আরো ভালো হইসে।

ম্যাডাম একটু বুঝায়া কন। অফিসে বইয়া থাকতে থাকতে মাথা হ্যাং হয়ে গেসে। সহজে কিছু বুঝবার পারি না।

আরে গাধা, দলের এখন যে অবস্থা। সমাবেশে তো লোকই হইতো না। হেফাজতের সমাবেশে তো সবাইরে যাইতে কইসিলাম, কেউ তো গেল না। তার উপরে আবার আমার ফখাও নাই খোকাওও নাই। চিনিচুরের পোলাডারেও পাওয়া যাইতেছে না। এই অবস্থায় সমাবেশের অনুমতি দিলেই তো বিপদে পড়তাম।

এইবার বুঝতে পারসি। তা ম্যাডাম কিছু তো করতে হইবো।

কি আর করবা? দিয়া দাও রবিবার হরতাল। হরতাল দিলে পরিশ্রমও কম।
ম্যাডাম, একটা ঘুর্নিঝড় নাকি আইতেসে। সাত নং বিপদ সংকেত দিসে। এর মাঝে কি হরতাল দেয়া ঠিক হইবো?

আমি হইলাম আপোষহীন নেত্রী, ঘুর্নিঝড় কি আমার হরতাল থামাইতে পারব নাকি? তাছাড়া এইখানেও তো রাজনীতি করার সুযোগ আছে। হরতাল একখান দিয়া রাখি, লাগলে পরে তুইল্লা নিমু। বলা তো যাইবো যে জনগণের কথা চিন্তা করে আমরা হরতাল তুইল্লা নিসি।

এইবার সব বুঝতে পারসি। এই না হলে আমাদের নেত্রী। লাস্ট একটা কথা ম্যাডাম।

আবার কি?

অনেক দিন ধরে তো পার্টি অফিসে আছি, বাসায় পরিবারের কাছে যাইতে মন চায়। বুঝেনই তো।

ঠিক আছে, আমার বাসায় চইল্লা আইসো

রুপান্তিরা এমনই হয়

১)

অঝোর ধারায় বৃষ্টি ঝড়ছে রুদ্রর চোখ বেয়ে। পুরুষ মানুষের কাদতে নেই। সে নিজেও কাদেনি কখনো। ছেলেবেলায় যখন তার পোষা টিয়া টা খাচা ভেংগে উড়ে গিয়েছিল, খুব কস্ট পেয়েছিল। তখনো কাদে নি সে। কিন্তু আজ?

বাবা, মা, বড়দা অনেকক্ষণ ধরে বুঝিয়েছে। বন্ধুরাও এসেছিল সান্তনা দিতে। তবু কান্না থামে নি। থামবে কিভাবে? তিন তিনটি বছর। দিনের হিসেবে এক হাজার দিনেরও বেশী। ঘন্টার হিসেবে? না, আর হিসেব করতে পারে না। মন ফিরে যায় তিন বছর আগে।

ফেসবুকে নতুন একাউন্ট খুলেছে। সদ্য এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ায় ঘরকুনো রুদ্রর অফুরন্ত অবসর। সময় কাটানোর জন্য ফেসবুকই ভরসা। হঠাৎ একদিন রুপান্তি নামের একজনের ফ্রেন্ডশীপ রিকুয়েস্ট আসলো। ফেক প্রফাইল কিনা ভাবতে ভাবতেই এক্সেপ্ট অপশানে ক্লিক পড়ে গেল।

"কি মশাই, নিদ্রা পাখি কি উড়াল দিয়েছে? ঘুমাবেন না? "
চ্যাটবক্সে রুপান্তির টেক্সট। কি এক অজানা ভালো লাগায় ছেয়ে গেল রুদ্রর মন। সেই থেকে শুরু। তারপর কত সময় যে কাটলো রুপান্তির সাথে চ্যাট করে। আস্তে আস্তে জানা হয়ে গেল দুজনের সব কথাই। হল ফোন নম্বর বিনিময়। ভাবনাগুলো কিভাবে জানি সব মিলে যায় রুপান্তির সাথে। রুপান্তিও এবার এইচএসসি দিয়েছে, ভিকারুননিসার দুর্দান্ত ছাত্রী। টার্গেট মেডিকেল। এদিকে রুদ্রর ইচ্ছা বুয়েটে পড়ার। ভর্তি পরীক্ষার প্রিপারেশন আর রুপান্তিকে নিয়ে ভাবা। সময় পেলেই চ্যাট, মাঝে মাঝে ফোনে অল্প কথা বলা। অসম্ভব ভালো লাগার মধ্য দিয়ে কাটতে লাগলো সময়। এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট বের হল। দুইজনই গোল্ডেন এপ্লাস পেয়েছে। এই আনন্দে সাহস করে চ্যাটে রুদ্র বলেই ফেলল,
"একদিন দেখা করবে রুপান্তি ? তোমাকে না খুব দেখতে ইচ্ছা করে "
অনেকক্ষন পর রুপান্তির রিপ্লাই,
"পরশুদিন, বিকাল পাচটা,বসুন্ধরা সিটি। একদম দেরি করবে না সোনা। "
নিজের সৌভাগ্যকে বিশ্বাস হচ্ছে না রুদ্রর। এতো সহজে রুপান্তি রাজি হবে তা ভাবতেও পারেনি। তারপরই সমস্যার কথা মনে পড়লো। দুরে কোথাও একা কখনো যায়নি রুদ্র। এটা তো সুদূর ঢাকা।

মায়ের কাছে কখনো কিছু গোপন করে না রুদ্র। একমাত্র আশা হিসেবে মাকেই সব খোলে বলল। সব শুনে অনেকক্ষণ রুদ্রর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকল মা। হয়তো ছেলের চোখে ভালোবাসার গভীরতা খুজলেন। হেসে বললেন,
"ঠিক আছে বাবা যা। তোর বাবাকে বোঝানোর দায়িত্ব আমার। "

মায়ের আশির্বাদ সাথে নিয়ে জীবনে প্রথমবারের মত খুলনা থেকে একা ঢাকা আসলো রুদ্র। বসে আছে বসুন্ধরা সিটির একটি রেস্টুরেন্টে। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে লিফটের দিকে। কখন আসবে রুপান্তি। অবশেষে আসল রুপান্তি। রুদ্রর বুকে খরস্রোতা পদ্মার ঢেউ তুলে পাশে এসে বসল। গল্প করতে করতে কখন যে সন্ধ্যা হয়ে গেল টেরই পেল না। সারাজীবন একসাথে থাকার ওয়াদা করে দুজন ফিরে গেল নিজেদের ঠিকানায়।

পড়াশোনায় আরো মনযোগী হল রুদ্র। বুয়েট যে তার চান্স পেতেই হবে। রুপান্তিকে যে সে কথা দিয়েছে।

কঠোর পরিশ্রমের পুরস্কার পেল রুদ্র। চান্স পেল বুয়েটের মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টে। এদিকে রুপান্তিও চান্স পেয়েছে ডিএমসি তে। শুরু হল দুজনের নতুন জীবন। লুকিয়ে লুকিয়ে একসাথে ঘুরতে যাওয়া, ছোটখাটো ব্যাপার নিয়ে মান অভিমান, খুনসুটি। এযেন উথাল পাথাল প্রেমের গীতিকাব্য। দেখতে দেখতে কেটে গেল তিন বছর। রুদ্রর দু চোখে শুধুই সুখসপ্ন। রুপান্তিকে সাথে নিয়ে আজীবন সুখের তরীতে ভেসে বেড়ানোর সপ্ন।

গত দুইদিন ধরে ফেসবুক একাউন্ট টি ডিএক্টিভেট ছিলো রুপান্তির। পাওয়া যাচ্ছিল না ফোনেও। তারপর আজ বিকেলে ফোন করে রুপান্তি যা বলল তা এরকম,
"আমার বাসা থেকে বিয়ে ঠিক হয়েছে। আমার পক্ষে ফ্যামিলির ডিশিসানের বাইরে যাওয়া সম্ভব না। আমাকে যদি রিয়েলি লাভ করে থাক, তাহলে ভুলে যাও আমাকে। "

এরপর থেকেই কাঁদছে রুদ্র। এই কান্নাই যে তার বাকি জীবনের সম্বল।
(এটা কোন গল্প নয়, সত্য ঘটনা। আচ্ছা রুপান্তিরা কেন এমন হয়)

২)
শেষটা তাহলে এভাবেই লিখা ছিল। মনিটরে ভেসে থাকা রুপান্তির শেষ ছবিটার দিকে তাকিয়ে এই কথাটিই ভাবছে রুদ্র। নিজের পিসিতে থাকা রুপান্তির সব ছবিই ডিলিট করে দিয়েছে সে,ডিলিট করে দিয়েছে মোবাইলের ইনবক্সে থাকা সব মেসেজও।শুধু মুছতে পারছেনা নিজের সমস্ত অস্তিত্যের সাথে মিশে থাকা রুপান্তির সৃতি্গুলো। তাই নিজেকেই শেষ করে দিবে সে। বিষ হাতে অপেক্ষা করছে রুদ্র,কখন শেষ হবে গান,
"যেতে চাইলে কাউকে ধরে রাখা যায়না
মন ছুটলে তাকে আর ফেরানো যায়না,
আমাকে ভুলে যদি সুখে থাকা যায়
রুপান্তি,তোমাকে জানাই বিদায়।"
(ফিরে এসো রুপান্তি,রুদ্রর জীবন ধংস করে দেয়ার অধিকার কেউ তোমাকে দেয়নি)

গোলাপীর দুদু সিরিজঃ ২

সকাল দশটায় গোলাপী কে দুদুর ফোন :

হ্যাল্লো ম্যাডাম!

কি ব্যাপার, তোমার কি সময়জ্ঞান নাই? এতো সকালে ফোন দিসো কেন?

জরুরি কথা কথা আছে ম্যাডাম। কাজ তো একটা করা লাগবো।

তোমার আবার কি কাজ? তোমার কাজ তো একটাই, পার্টি অফিসে রাতদিন বইয়া থাকা আর মাঝে মাঝে টিভিতে নিজের খোমা দেখানো।

না মানে ঠিক আমার না। আপনাগো করতে হইবো।

বুঝায়া কও, তোমার কথাবার্তা রাডারে ধরা পরতেসে না।

ম্যাডাম আপনাগো মানে চার দলীয় জোটের এমপিদের তো সংসদে যাওয়া লাগব।

তুমি কি পাগল হইলা নাকি? আমি এখন আপোষহীন মুডে আছি। সংসদ টংসদে যাইতে পারুম না। তার উপর নেতারা আছে সব দৌড়ের উপর। ডাকলে তো কাউরে পাওয়া যায় না।

ম্যাডাম নব্বই কার্যদিবসের মেয়াদ তো প্রায় শেষের পথে। এর মাঝে না গেলে তো আপনাদের সদস্য পদ থাকবো না।

এইটা আগে কইবা না। জানই তো অঙ্কে আমি কাচা, এতো হিসাব নিকাশ কি মাথায় থাকে নাকি? তাইলে তো সংসদে যাইতেই হইবো। সংসদ সদস্য পদ না থাকলে আমরা খামু কি? যামু কই? সরকারি প্রটোকল ছাড়তে হইবো, ন্যাম ফ্ল্যাটের বাড়ি ছাড়তে হইবো, শুল্ক মুক্ত গাড়ি ছাড়তে হইবো। এগুলো ছাড়া জনগণের সেবা করমু কিভাবে? দিয়ে দাও একটা প্রেসনোট, গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা সংসদে ফিরতেসি।

ঠিক আছে ম্যাডাম। তা আপনার জন্য কি বক্তৃতা লিখা লাগবো?

আমি হইলাম আপোষহীন নেত্রী। গিয়াই তো ওয়াকআউট করুম। বক্তৃতা দেয়ার টাইম কই। তাছাড়া ইদানীং আমার বক্তৃতা হইতাসে না, কি থাইকা কি কয়া ফেলাই ঠিক নাই। অবশ্য চিনিচুরের পোলা আন্ডাটা থাকলে কিছু ফডর ফডর করতে পারতো। রাখলাম এখন। বিউটিশিয়ান রে খবর দিতে হইবো। কতদিন পর সংসদে যাইতেসি। খোমাখানাতে তো মাঞ্জা মারা লাগবো।

(অবশেষে দেশ ও গণতন্ত্রের কথা চিন্তা করে সংসদে ফিরছে বিএনপি )
6

গোলাপীর দুদু সিরিজঃ ১

গোলাপীর উপদেষ্টা দুদুরে ইদানীং আমি ভালা পাওয়া শুরু করসি। পোলাডার চেহারায় একটা এতিম এতিম ভাব চইল্যা আসছে। দেখলেই মায়া লাগে। মনে লয় মাথায় হাত দিয়া কই, অনেক রাজনীতি করস বাজান। এলা বাড়িত গিয়া ঘুম দেও।

সংবাদ সম্মেলনে কি সুন্দর টুকটুক কইরা কথা কয় পোলাডা। আজও একটা সংবাদ সম্মেলন করল। জিয়ার মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে সাত দিনের কর্মসূচী ঘোষণা করল। ফুল দেওন, ছবি আকাআকি, সেমিনার এইসব কর্মসূচী। হেতারা নাকি জনগণের কথা চিন্তা কইরা আপাতত আর কঠোর কর্মসূচি দিব না। একটুপর আবার কইলো এইভাবেই নাকি সরকাররে ফালায়া দিব। শুইন্না তো পুরাই মাননীয় চোদনা হইয়া গেলাম।

বিএনপি কে বলি, এখনো সময় আছে লাইনে আসেন। আপ্নাদের কমেডি আর ভালো লাগতেসেনা।

ভালো নেই সোনাপুর গ্রাম

গ্রামের নাম সোনাপুর। নদী তীরের ছোট্ট একটি গ্রাম। জনবহুল এই গ্রামে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সৌহার্দপূর্ণ সহাবস্থান। গ্রামের মানুষজন খুবই সহজ সরল। কিন্তু তাই বলে বাইরের কারও মাতাব্বরি কখনই সহ্য করে নি।
এই গ্রামেরই দুই নামকরা পরিবার । মিয়া বংশ আর মোল্লা বংশ। গ্রামের মানুষজনের উপর এই দুই পরিবারেরই অগাধ প্রভাব প্রতিপত্তি। বলা যায় এই দুই বংশের কথাতেই পুরা গ্রাম চলে। এই দুই পরিবারের কোন এক পরিবার থেকেই প্রতিবার মেম্বার নির্বাচিত হয়। গ্রামের মানুষ জনও রসিক আছে। কাউরেই পরপর দুইবার চান্স না। এই ইলেকশনে মিয়া বংশ তো পরের ইলেকশনে মোল্লা বংশ। এভাবেই চলছিল বেশ।
সোনাপুর গ্রাম অবস্থিত আমতলী ইউনিয়নে। বারেক ভুইয়া ইউনিয়নের অবিসংবাদিত নেতা। অনেক বছর ধরে চেয়ারম্যান। পুরা ইউনিয়নের উপরই তার কঠোর নজর দারি। নজরদারিতে আছে সোনাপুর গ্রামও। অবশ্য এই গ্রামের প্রভাবশালী দুই বংশের সাথেই তার যোগাযোগ আছে। প্রতিবার মেম্বারি নিরবাচনের আগে দুই বংশের লোকেরাই তার দোয়া নিয়ে যায়। উনিও সবার মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। সহায়তার আশ্বাস দেন। দুই বংশের লোকেরাই উনাকে খুশি করার জন্য অনেক অঙ্গিকার করে আসে। কিন্তু মেম্বার হয়ে যাওয়ার পর গ্রামের লোকজনের চাপেই আর বারেক ভাইকে বেশি কিছু দেয়া হয় না।
বারেক ভাইয়ের অবশ্য সোনাপুর গ্রাম কিভাবে চলবে তা নিয়ে মাথাব্যাথা নাই। উনার চাওয়া হল সোনাপুর গ্রামের পাশে যে বিশাল চরটা জেগে উঠছে তার দখল নেয়া। এইটার দখল নিতে পারলে তার আশেপাশের সব গ্রামে তার আধিপত্য আরো সুদৃঢ় হয়। তাছাড়া সোনাপুর এর পাশের গ্রাম অচিনপুরে তার একজন ভালো প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরি হচ্ছে। যেকোন সময় চেয়ারম্যান নির্বাচনে দাড়িয়ে যেতে পারে। এটাও তার একটা মাথাব্যাথার কারন।
উনি বুঝতে পারলেন মিয়া আর মোল্লা বংশ দিয়ে হবে না। এরা কখনোই উনাকে চরের দখল দিবে না, যত আশ্বাসই দিক। উনি ঠিক করলেন নতুন আরেকজনকে মেম্বার বানাবেন। বললেই তো আর হয় না। এটার জন্য অনেক প্ল্যান প্রোগ্রাম এর দরকার আছে। উনি সোনাপুর গ্রামের ইউনুস মাস্টারকে ঠিক করলেন। লোকটার পড়ালেখা আছে,চেহারা ছবি ও খারাপ না। বারেক ভাই ইউনুস সাহেবকে তার সভা সমাবেশে ডাকতে লাগলেন। দুই একটা পুরস্কার ও দিয়ে দিলেন।
লোক ত ঠিক হলো। এবার তো তাকে নির্বাচনে পাশ করাতে হবে। সমস্যা হল,সোনাপুর গ্রামের লোকেরা আবার মোল্লা বংশ আর ভুইয়া বংশের বাইরের কাউকে ভোট দেয়না। এখন উপায় একটাই। এই দুই বংশের মাঝে ঝামেলা লাগিয়ে দেয়া। এই দুই বংশের ঝামেলায় মানুশজন যখন অস্থির হয়ে যাবে তখন বারেক ভাই দরবার ডেকে ইউনুস সাহেবকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবেন। সোজা হিসাব। শত হইলেও ইউনুস ভাই শিক্ষিত লোক। বারেক ভাইও শান্তি প্রিয় মানুশ। উনি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তো আর সোনাপুর গ্রামে কোন ঝামেলা চলতে পারে না।
আপাতত এই অবস্থাতেই আছে সোনাপুর গ্রাম। সবই ঠিক আছে,শুধু মানুশগুলোই শান্তিতে নাই।

(এটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক গল্প,অন্যকোন অর্থ খুজতে যাবেন না। আমরা আদার ব্যাপারী,আমাদের জাহাজের খবর নিয়ে লাভ কি ?)