রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

আমার বন্ধু রাশেদ


জাফর ইকবাল স্যারের কিশোর উপন্যাস "আমার বন্ধু রাশেদ" অবলম্বনে মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রটি দেখলাম। দুই ঘন্টার জন্য হারিয়ে গিয়েছিলাম একাত্তর এর উত্তাল দিনগুলিতে। কখনো রাশেদ আবার কখনো বা ইবুর চরিত্রে। রাশেদের প্রতিটি পরিকল্পনা সফল হওয়ার সাথে সাথে নিজেই যেন সফল হলাম। শেষ দৃশ্যে রাজাকার আজরফ আলীর ছোড়া গুলি যেন রাশেদের বুক বিদীর্ণ করার সাথে সাথে আমার বুকটাও বিদীর্ণ করল। 


জাফর ইকবাল স্যার একবার বলেছিলেন, "একজন বিখ্যাত মানুষ দিয়ে কি হয়? কিছুই হয় না। কিন্তু একশো জন খাটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টিয়ে দেয়া যায়।" আসলেই তাই। এদেশে বিখ্যাত মানুষের খুব বেশি দরকার নেই। আমাদের দরকার বেশ কয়েক জন রাশেদকে। যারা তাদের সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে দেশের জন্য কাজ করে যাবে, কি পেল না পেল তা নিয়ে ভাববে না। যারা প্রতিমুহূর্তে গাইবে, "জন্ম আমার ধন্য হল মাগো, এমন করে আকুল হয়ে আমায় তুমি ডাক।" তাহলেই এদেশটা খাটি সোনার বাংলা হবে।
 

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বেশ কিছু ভালো চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেই চলচ্চিত্রগুলো গণমানুষের কাছে খুব ভালোভাবে পৌছানো যায়নি। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বেশ কিছু ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র যেমনঃ ওরা এগারজন, আবার তোরা মানুষ হ, কলমীলতা, জয় বাংলা, অগ্নিসাক্ষী, ধীরে বহে মেঘনা, আলোর মিছিল, হাঙর নদী গ্রেনেড, নদীর নাম মধুমতি, মেঘের অনেক রঙ ইত্যাদির প্রিন্টও খুজে পাওয়া দুস্কর। সাম্প্রতিক সময়ে তৈরি আগুনের পরশমণি, জয়যাত্রা, শ্যামলছায়া, গেরিলা প্রভৃতি চলচ্চিত্রগুলো শহর এলাকায় বেশ ভালো দর্শকপ্রিয়তা পেলেও গ্রামাঞ্চলে সেভাবে ছড়িয়ে দেয়া যায়নি। অথচ এই সিনেমাগুলো সর্বস্তরে দেখানোর ব্যবস্থা করতে পারলে তা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগরূক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারত। "আমার বন্ধু রাশেদ" সিনেমাটি দেশের সব স্কুলে দেখানোর ব্যবস্থা করা উচিত। স্কুলগামী ছেলেমেয়েদের মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলতে এই সিনেমাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
 
 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন