এ যুগের 'মফিজ পাগলা'
সে
অনেকদিন আগের কথা। আমাদের গ্রামের মফিজ ভাই মেট্রিক পরীক্ষায় ফেল করে কথা
নাই বার্তা নাই হঠাৎ করে পাগল হয়ে গেল। সবাই আফসোস করল কিছুদিন, আহারে এই
বয়সে ছেলেটার এই অবস্থা! সবাই মিলে চিকিৎসা টিকিৎসাও করাইলো। কিন্তু কাজের
কাজ কিছুই হইল না। মফিজ ভাই থেকে সে হয়ে গেল মফিজ পাগলা।
প্রথম
প্রথম সড়ক দিয়া মফিজ পাগলা শুধু হাঁটত আর বিড়বিড় করে কথা বলত। মানুষজন
সহানুভূতির দৃষ্টিতে তার দিকে তাকাইত। গ্রামের খালা চাচীরাও মাঝে মাঝে
ডাইকা দু এক সন্ধ্যা ভাত খাওয়াইত তারে। কিন্তু, কিছুদিন পর থেকেই শুরু হল
তার মফিজ পাগলার আসল উপদ্রব। কোথা থেকে এক দা জোগাড় করল আর রাস্টাঘাটে
মানুষ জনকে কাইট্টা লামু, মাইরা লামু কইয়া ভয় দেখানো শুরু করল। কিন্তু করত
না কিছুই। তারপরও আমরা বাচ্চারা তো তারে দেইখাই ভয়ে দৌড় দিতাম, বড়রাও
পারতপক্ষে তারে এড়িয়ে চলারই চেষ্টা করত।
একদিন মফিজ পাগলা আমাদের
গ্রামের গর্ব কালাম ভাইয়ের পথ আটকায়া তারেও হুমকি ধামকি দেয়া শুরু করল।
কালাম ভাই হাডুডু খেলায় গ্রামের সেরা খেলোয়াড়, তার কারণে আমাদের গ্রামকে
হাডুডু খেলায় আশেপাশের কোন গ্রামই হারাতে পারে না, দুইমণি বস্তা উনি
একধাক্কায় মাথায় তুলতে পারেন। আর মফিজ পাগলা কিনা গেসে তারেই ভয় দেখাইত!
কালাম ভাই মফিজ পাগলার গালে ঠাশ করে দিল বিরাশি শিক্কার এক থাপ্পড়। এক চড়েই
মফিজ পাগলা ঠান্ডা। আর জীবনেও হেন করেঙ্গা, তেন করেঙ্গা টাইপ কিছুই বলে
নাই কাউকে, ভয় দেখানো তো দূরের কথা।
এই গল্প থেকে আমরা কি শিখলাম বন্ধুরা?
বিএনপির নেতাকর্মীদের হুমকি ধামকি শুনে আমার মফিজ পাগলার কথা মনে পড়তেসে।
এখন দরকার শুধু জনগণের পক্ষ থেকে একটা থাপ্পড়। জীবনের জন্য ঠিক হয়ে যাইব
তারা। কথায় বলে না, পাবলিকের মাইর জগতের বাইর।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন