বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০১৩

এলোমেলো ভাবনাগুলো

১)
তোমাদেরকে আমি আমার ছেঁড়া ঘুড়িটার গল্প বলেছি? বলিনি বোধহয়। তবে শোন সেই গল্প।
 খুব প্রিয় একটা ছেঁড়া ঘুড়ি ছিল আমার। কিযে ভাব ছিল আমাদের মাঝে। আমরা একসাথে হাসতাম, একসাথে কাঁদতাম। কত যে আনন্দ বেদনার স্মৃতি জড়িয়ে আছে সেই ঘুড়িটার সাথে।
আমার প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার রেজাল্ট যেদিন বের হল কি যে খুশি হয়েছিল সে, বলে বোঝাতে পারবোনা। বাবার পকেট থেকে প্রথম যেদিন টাকা চুরি করলাম, খুব কস্ট পেয়েছিল আমার ঘুড়িটা। রুপান্তির কাছ থেকে জীবনের প্রথম প্রেমপত্রটি যখন পেলাম, কি লজ্জাটাই না পেয়েছিল সে। লজ্জায় একেবারে লাল হয়ে গিয়েছিল। জীবনে প্রথম যেদিন সিগারেটে টান দিলাম, খুব রেগেছিল আমার উপর। কথা বলেনি তিনদিন। আরো কতশত ঘটনা, এযেন এক সুখ দুঃখের গীতিকাব্য। আমার সেই ঘুড়িটাই দূর আকাশে উড়তে উড়তে একদিন মেঘ হয়ে গেল, আর ফিরে এলোনা আমার কাছে। কিন্তু আমি জানি বৃষ্টি হয়ে আমার কাছে ফিরে সে আসবেই, তাকে যে আসতেই হবে। 
আমি সেই বৃষ্টির প্রতীক্ষায় আছে, আমি আমার ছেঁড়া ঘুড়ির প্রতীক্ষায় আছি।

২)
নাহ,ঘুম টাকে নিয়ে আমি আর পারছি না। এই কিছুক্ষন আগেও আমার পাশেই ছিল। আমাকে বলল,বাইরে থেকে একটু চাদের আলো খেয়ে আসি,আমি আর মানা করলাম না। এখন জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি আকাশে চাদ নেই। বুঝতে পেরেছি ঘুম টা নিশ্চই মোড়ের টং ঘরে গিয়ে একটা সিগারেট ধরাবে !
এবার এর একটা বিহিত করতেই হবে। ভাবছি ঘুম টাকে একটা বোরডিং স্কুলে দিয়ে দিব।তাহলে আর আমাকে বিরক্ত করতে পারবে না।
ঘুমহীন একটা জীবন,মন্দ হবে না আশা করি !

৩)
আগের যুগের প্রেমঃ "ভালবেসে সখী নিভৃতে যতনে আমার নামটি লিখো তোমার মনেরও মন্দিরে"

এ যুগের প্রেমঃ ভালবাসলে নিভৃতে মনের মন্দিরে কিছু লিখার দরকার নাই। ফেসবুকে রিলেশনশিপ স্ট্যাটাসটা চেঞ্জ করে সবাইকে জানিও দিও।

সত্যিই, প্রজন্ম বড় অদ্ভুদ !

৪)
অনেকক্ষণ ধরে নিজের টাইম লাইন ঘাটলাম। বহু স্মৃতি মনে পড়ল। মনে পড়ল অনেক মানুষের কথা। বেশ কয়েকজন আছেন যারা চিরতরে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। এই ফেসবুক তাদের স্মৃতি ঠিকই ধরে রেখেছে।
সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছে ভার্সিটি লাইফের চমৎকার দিনগুলোর কথা। অসাধারণ সব বন্ধুদের সাথে কাটানো চমৎকার অনেক মুহূর্তের স্মৃতি মনের কোণে ভীড় করছে।
অনেক অনেক ট্যুর এর ছবি দেখে আবার ঘুরতে বের হওয়ার ইচ্ছা জেগে উঠেছে। কতদিন ঘুরতে যাইনা।
নিজের টাইমলাইন ঘেটে নিজের ব্যাপারেই নতুন কিছু ইনফো পেলাম ! এই যেমন ২০১০ সালে আমি প্রথমবারের মত বুঝতে পেরেছিলাম যে আমার একটা গার্লফ্রেন্ড থাকলে মন্দ হত না। (প্রমাণ দিয়া দিলাম সাথে)
অনেক কিছুই চেঞ্জ হয়েছে। বড় হয়ে গিয়েছি, ফেসবুকেও এখন ইংলিশে না লিখে বাংলায় লিখি। কিন্তু একটা অভ্যাস এখনো বদলায়নি। আর তা হল নচিকেতার গান শুনে শুনে তার লিরিক স্ট্যাটাসে তুলে দেয়া। নচিকেতাই আসলে আমার নিঃসঙ্গ সময়ের প্রকৃত বন্ধু।
 



 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন