বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০১৩

মে দিবসের ইতিকথা

সহস্র লাশের উপর দাড়িয়ে আগামীকাল পালিত হতে যাচ্ছে "মহান মে দিবস "। ফিনিক্স, স্পেক্ট্রাম, তাজরীন এবং অতি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া রানা প্লাজার দূর্ঘটনা আমদের এ কথাই মনে করিয়ে দেয় যে, শ্রমিক ভাইবোন দের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি এতটুকুও অথচ এর জন্যই 1886 সালে শ্রমিক আন্দলোনে জীবন দিয়েছিলেন শ্রমিক ভাইয়েরা।

কি ছিলো সেই আন্দোলনের ইতিহাস?


1886 সালের শুরু থেকেই দৈনিক আট ঘন্টা কাজের সময় ও ন্যায্য মজুরীর দাবিতে শ্
রমিক আন্দোলন শুরু হয় ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে। পহেলা মে 'র শ্রমিক সমাবেশের মাধ্যমে এই আন্দোলন ব্যাপকতা লাভ করে। এরই ধারাবাহিকতায় চারই মে আমেরিকার হে মার্কেটের সামনে আরেকটি সমাবেশের জন্য জমায়েত হয় শ্রমিকরা। সেই সমাবেশ থেকে পুলিশের উপর একটি বোমা ছুড়ে মারে কেউ একজন যার পরিচয় কখনোই জানা যায় নি। এই ঘটনার জের ধরে পুলিশ সেই সমাবেশে গুলিবর্ষণ করে। নিহত হন এগারো জন শ্রমিক। অথচ এই ঘটনায় শ্রমিকদের উস্কানি দেয়ার অভিযোগে ছয় শ্রমিক নেতাকে প্রকাশ্য ফাসির রায় দেয়া হয় 1987 সালের 11 নভেম্বর। শ্রমিক নেতাদের মাঝে ছিলেন পার্সন্স, জোয়ান মোস্ট, আগস্ট স্পীজ, লুই লিংক। লুই লিং কারাগারেই আত্মহত্যা করেন। বাকিদের প্রকাশ্য ফাসি দেয়া হয়। ফাসির মঞ্চে দাড়িয়ে আগস্ট স্পীজ বলেছিলেন, "আজ আমাদের নিঃশব্দতা, তোমাদের আওয়াজ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী। " এই ঘটনার স্মৃতি ধরে রাখার জন্য. রেমন্ড লেভিনে 1890 আমেরিকার জাতীয় শ্রমিক কংগ্রেসে পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব করেন। সেই থেকে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের প্রতীক হিসাবে পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে।

যে শ্রমিকদের ঘামের বিনিময়ে আমদের সভ্যতা উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে সেই শ্রমিকরা এখনো চরমভাবে অবহেলিত। তাদের নিরাপদ জীবনের গ্যারান্টি আমরা দিতে না পারি অন্ততপক্ষে নিরাপদ মৃত্যুটা নিশ্চিত করা হবে, এবারের মে দিবসে এই হোক আমাদের সকলের অঙ্গিকার।
এপ্রিল ৩০,২০১৩

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন