বলতে
দ্বিধা নেই, ছোটবেলা থেকেই প্রচন্ড দুস্ট ছিলাম। হয়তো গ্রামে বড় হওয়ার
কারণে প্রকৃতির উদ্দামতাই ভর করে থাকতো সবসময়। বাসায় আমার নামে আসা বিচারের
অন্ত ছিলো না। যেকোন অঘটন ঘটিয়ে বাসায় এসে প্রথম যে কাজটা করতাম তা হলো
কোন না কোনভাবে আম্মু কে একবার জড়িয়ে ধরা। এটা করতে পারলেই সাতখুন মাফ।
বাকি সব সামাল দেয়ার দায়িত্ব আম্মুর।
মধবিত্ত ফ্যামিলিতে বড় হওয়ার কারনে অর্থের প্রাচুর্য আমাদের ছিলো না। তারপরও কখনো
কোন কিছুর অভাব অনুভব করতে হয় নি। কোন কিছু চাইলে কিভাবে কিভাবে জানি ঠিকই
ম্যানেজ করে ফেলত আম্মু। এটা করতে গিয়ে উনি যে নিজের সব স্বাদ আহ্লাদ
বিসর্জন দিয়েছেন তা বুঝে উঠতেই অনেক সময় লেগেছে।
আম্মুকে ছাড়া একা
ঘুমাতে পারতাম না। খেতে পারতাম না নিজ হাতেও। একারণেই কোথাও বেড়াতেও যাওয়া
হত না। অথচ সেই আমাকেই বাসা ছাড়তে হল অল্প বয়সেই। ফটিকের মত একটা জীবন
নিয়ে ঢাকায় চলে আসতে হল কলেজে পড়ার জন্য। এরপর ভার্সিটি। সময়ের সাথে সাথে
অভ্যস্ত হয়ে উঠলাম মায়ের স্পর্শ বিহীন জীবনের একটা জীবনের সাথে। কিন্তু
মনের গোপন কুঠুরিতে মায়ের জন্য হাহাকার এক মুহুর্তের জন্যও থেমে নেই, এ
হাহাকার থামার নয়।
মাগো, বায়েজিদ বোস্তামীর মতো সারারাত তোমার
শিয়রে পানির পেয়ালা হাতে দাড়িয়ে থাকার সুযোগ হয়নি। সুযোগ হবে না
বিদ্যাসাগরের মতো স্রোতস্বিনী নদী পার হয়ে তোমার কাছে পৌছানোরও। তারপর জেনে
রেখ মা, তুমি আছ আমার সমস্ত অস্তিত্বের সাথে মিশে। তোমার জন্যই আমার বেচে
থাকা, ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ এই জীবনে নিরন্তর পথচলা।
পৃথিবীর সমস্ত মায়ের প্রতি রইলো শত সহস্র সালাম।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন