বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০১৩

জয়নাল ভাইয়ের কুকীর্তিঃ ৩

বাজারে এলো জয়নাল ভাইয়ের নতুন টেলিকথন। কি অপূর্ব জয়নাল ভাইয়ের মেয়ে পটানোর প্রতিভা। কি দারুণ ভাবেই না নিজের প্রশংসা করেন। কি অবলীলায় মিথ্যা বলে যান। কি সুন্দর সুন্দর উপমা ব্যাবহার করেন। কি নাটকীয় ভাবে অভিমানের ভান করেন।
আজ থেকে জয়নাল ভাইকে জাতীয় “লাভগুরু” উপাধি দেয়া হোক। উনার কাছে শিক্ষা পেলে জাতি হয়ে উঠবে প্রেমময়। দেশ হয়ে উঠবে বাবুময়। জয় বাবু জয়নালের জয়।

জয়নালঃ লাইনটা কেটে গেসে, আমি এখন চেস্টা করতেসিলাম।
নারীকন্ঠঃ না অসুবিধা নাই,আপনি তো সবসময় করেন। এখন আমি করি।
জয়নালঃ না আমি করি আমি করি। তোমার পয়সা নস্ট হবে তো।
নারীকন্ঠঃ না অসুবিধা নাই। আমার পয়সা নস্ট হলে বাংলাদেশ থেকে যেরকম ফ্লেক্সিলোড করেন না,এরকম ই-ফ্লেক্সিলোড করে দিবেন।
জয়নালঃ তা তো হবেই,ইনশাল্লাহ ইনশাল্লাহ।
নারীকন্ঠঃ আরে পাম্প দিসি,বাংলাদেশ থেকে ই-ফ্লেক্সিলোড করা যায় নাকি? এটা তো শুধু বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশে।
জয়নালঃ ডোন্ট ওরি ডোন্ট ওরি।
নারীকন্ঠঃ আপনি নাস্তা করসেন?
জয়নালঃ না এখন উঠসি মাত্র, উঠে হাটতেসি। না না তুমি যদি একথা বল, সকালে উঠে যদি এই কথা বলে তো মনটা খারাপ করে দিলা।
নারীকন্ঠঃ কি বলসি ভাই?
জয়নালঃ না না তুমি বলসো আমার জান তো আমার কাছে।
নারীকন্ঠঃ তো কাছে কিনা বলেন? সারাজীবন তো সংসার করে আসলেন, উনা জান হবেন না?
জয়নালঃ না সারাজীবন সংসার করলেই কি অন্যের সাথে বন্ধুত্ব করা যায় না?
নারীকন্ঠঃ যায় না কেন যায়। অবশ্যই যায়।
জয়নালঃ ওয়েস্টর্ন কান্ট্রিতে থাইকা, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশে থাইকা যদি এই উত্তর দাও তাইলে মনটা খুব খারাপ হয়ে যায়।
নারীকন্ঠঃ শুনেন ভাই মন খারাপ কেন করতেসেন? আমি তো সিরিয়াসলি বলি নাই।
জয়নালঃ না সকালে তুমি আমার মনটা খুব খারাপ করে দিসো, ভোরবেলায়।
নারীকন্ঠঃ মন খারাপ হয়ে গেসে?
জয়নালঃ প্রতি মুহূর্তে দুইবার ফোন করি তিনবার ফোন করি।
নারীকন্ঠঃ ওইটা আমার সৌভাগ্য। আমি সবসময় বলি।
জয়নালঃ তোমার গলার আওয়াজ শোনার জন্য ফোন দিয়া বসে থাকি আর তুমি বল জান দিতে পারি নাই। তোমাকে দেখার জন্য আসতেসি আমি শিকাগো, এখন তুমি কি মনে কর? ঠিক আছে লাগবে না।
নারীকন্ঠঃ আমাকে দেখার জন্য? এই ওয়েস্টার্ন আমেরিকাতে কত সুন্দর সুন্দর মেয়ে আছে।
জয়নালঃ শোন যতই থাকুক যতই থাকুক,বুঝছো। এই পৃথিবীতে এই আমেরিকাতে আমি কত হাজারবার গেসি তার ঠিক নাই। কিন্তু আমি জীবনে কোন মেয়ের দিকে তাকাই নাই। এখন তুমি যদি আমাকে ওয়াদা করতে বল আমি ওয়াদা করতে পারি যে, ফারুক সাহেবের এমন কোন চরিত্রও নাই,এমন কোন মদও খাই না, কোন লেংটা ক্লাবেও যাই না শুধু ক্যাসিনোতে যাই। আড্ডা দেই, বাসায় আসি। জীবনে কেউ কোনদিন বলতে পারবে না। আজকে আমি ত্রিশ বছর এমপি, যখন আমার বয়স বাইশ বছর তখন আমি এমপি। এখন আমার বয়স চুয়ান্ন বছর শেষ হচ্ছে। নেভার কেউ বলতে পারবে না যে আমি তার দিকে তাকাইসি। কিন্তু আমার জীবনে, তুমি একটা কথা বলসিলা যে দুইদিন আগে কেন পরিচয় হলো না । আমি তোমাকে বললাম তো আগে যদি পরিচয় হতো আমি তোমাকে মাথার উপর রাখতাম,মাথার উপর।
নারীকন্ঠঃ আমি তো সেইরকম মেয়ে না, আমাকে কেন বড় লজ্জা দিতেসেন?
জয়নালঃ আমি জানি না আমি কেন তোমাকে। তুমি কিরকম না, তোমার দৃষ্টিতে তুমি কিরকম না কিন্তু আমার দৃষ্টিতে তুমি একটা আটলান্টিক সাগর।
নারীকন্ঠঃ ভালো বলসেন।
জয়নালঃ দ্যাটস এনাফ। আমি জানি না আমাকে তুমি কতটুকু ভালবাস, কতটুকু স্নেহ কর আমি জানি না। কিন্তু এতটুকু মনে রেখ মানুষের জীবনে এইটা একবারেই আসে দুইবার আসে না।
নারীকন্ঠঃ আপনি অনেক মায়া লাগায়া কথা বলেন। আমি জানি না কেন প্রথম থেকেই কথা বলতে বলতে এত সহজে মিশে যান। মানে খুব তাড়াতাড়ি কাছে চলে আসেন। আমি নিজেও বুঝি নাই এভাবে আপনার সাথে কথা বলব। এত ক্লোজলি, এত ক্লোজভাবে কথা বলব। আমি নিজেও চিন্তা করি নাই সেটা।
জয়নালঃ সেটা তো নির্ভর করবে তোমার উপর। আমার উপর না। কিন্তু আমি তোমাকে কতটুকু ভালোবাসি কতটুকু স্নেহ করি টেলিফোন করে বুঝবানা সেটা। তুমি জান,তুমি আমাকে যেদিন তোমার বাসায় ইফতর খাইতে গেসি। মনে পড়ে তোমার, মনে কইরো এইগুলা। আমার কিন্তু সব লিখা থাকে, আমার স্মৃতিশক্তি অনেক ভাল তুমি জান?
নারীকন্ঠঃ সেটা আমি জানি, রহমতকেউ আমি বলসি সেটা অন্য একটা কারণে যে আপনার স্মৃতি শক্তি অনেক ভাল অনেক কিছু মনে ঠাকে।
(লাইন কেটে গেলো)
লিঙ্কঃ https://soundcloud.com/bristi-balika/vtdebh5em5qd

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন