শুক্রবার, ২৪ মে, ২০১৩

একজন সুখী মানুষের গল্প

রিকশায় উঠে চালকের সাথে কথা বলা আমার অনেক পুরানো অভ্যাস।এভাবে কথা বলে অনেক মানুষের সুখ,দুঃখ আর স্বপ্নের কথা জানতে পেরেছি। বেশ কয়েক জনের সাথে মাঝে মাঝে যোগাযোগ ও হয়। আজ এমন একজন মানুষের সাথে কথা হল, যার সাথে কথা বলে নিজেই গর্বিত হয়েছি।একজন পরিপূর্ণ সুখী মানুষ দেখার অনেক ইচ্ছে ছিল,আজ সে সাধ পূরণ হল।শুনুন সেই অসাধারন মানুষটির কথা।
উনার নাম জিন্নত ভাণ্ডারী। বয়স,আনুমানিক ৬০। দেশের বাড়ি শরিয়তপুর। ঢাকায় আছেন ২৫ বছর ধরে,থাকেন কামরাঙ্গিরচর।২ ছেলে,২ মেয়ে।সবার বিয়ে দিয়েছেন,নাতি নাত্নি ও আছে। ছেলেরা উনার সাথেই থাকে। এক ছেলের মুদির দোকান আছে,আরেক ছেলে মুরগির বেবসা করে। কামরাঙ্গিরচরে উনার ৩ কাঠা জমি আছে,নিজের আছে ৬ টি রিক্সা। উনার স্ত্রী সাড়ে ৭ হাজার টাকা বেতনে মিটফোর্ডে এক ক্লিনিকে কাজ করেন। এতসব শুনে জিজ্ঞেস করলাম,"চাচা,আপ্নার তো তেমন অভাব নেই।এই বয়সে এত কষ্ট করে রিক্সা চালান কেন ?" উনি বললেন," বাজান,কাজ না কইরা থাকতাম পারি না। ছেলেরাও বকাঝকা করে রিক্সা চালাই বইলা, কিন্তুক আমার ঘরে বইয়া থাকতে ভাল্লাগেনা। যতদিন শইল্লে কুলায় রিক্সা চালায়া যামু।" কিছুক্ষন পর আবার জিজ্ঞেস করলাম,"চাচা আপনি কি সুখী"। উনি উত্তর দিলেন,"আমার সুখের কোন অভাব নাই বাজান"। আল্লাহ তাআলা এই মহান আলকিত মানুষটিকে দীর্ঘজীবী করুন আর আমাদের সবাইকে উনার মত পরিশ্রমী হতে সাহায্য করুন। তাহলেই আমরা পারব এই দেশটাকে সুন্দরভাবে গড়তে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন